এই ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়া,ক্ষমতায় থেকে যাওয়াটাও অনেকটা নির্ভর করে সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় স্বার্থের উপর ভিত্তি করেই।তাই সেই স্বার্থে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করেই দেশকে উত্তাল করা সম্ভব হয়।এক্ষেত্রে ভারত,শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ,পাকিস্তান সবগুলো দেশের অবস্থান একইরকম।রাজনীতি দুর্বল হলে ধর্মের হাত ধরে আর ধর্ম দুর্বল হলে রাজনীতির।
স্বৈরতান্ত্রিক দেশগুলোর সরকারের মূল লক্ষ্য থাকে দেশের প্রধান সংকট(নির্বাচন,নির্বাচনকালীন সরকার,দ্রব্যমূল্য) থেকে ফোকাস সরিয়ে নিয়ে জনগণের নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে দেওয়া,ইস্যু তৈরি করে দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। যেহেতু জনগণের সমর্থনের থেকে অন্য দেশের সমর্থন পাওয়াটাই এই অবস্থায় জরুরি হয়,তাই তাদের দেখানোও যায় এই উগ্র মানুষদের আমরাই শুধু নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
বর্তমান সময়ের রাজনীতির সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো মানুষকে যত ভাগে বিভক্ত করা সম্ভব সবভাবে বিভক্ত করেছে । এক ভাগকে অপর ভাগের ধ্বংসের কাজে লিপ্ত করেছে । কিন্তু বিবাদমান সকল পক্ষকেই নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পেরেছে ।
টিপ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোল্লাদের কবর,মুন্সিগঞ্জে বিজ্ঞান শিক্ষক থেকে নওগাঁর হিজাব,বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমানসহ বাকি ধর্মের মানুষ ভাতৃত্বের মাঝে থাকতে থাকতে হঠাৎ করে কেন হিংসাপরায়ণ হয়ে উঠে?
এবং যখন এসব শুরু হয় কেন পর্যায়ক্রমে একইরকম বিষয় চলতে থাকে ভেবে দেখা জরুরি। ধর্মীয় উস্কানীতে কাদের লাভ হয় ভেবে দেখেন,যারা এসব নিয়ে কথা বলে সেই রাজনৈতিক দলকে সাইজ করা যায়,বামদের সেন্টিমেন্ট কাজে লাগানো যায়,আমেরিকা-ভারত কে দেখানো যায় যে-আমরাই একমাত্র এই মুসলিমদের থামাতে পারি,তাই আমরা ক্ষমতায় থাকলেই ভালো।তাই কার গুটি হিসেবে কাজ করছেন সেটা বুঝতে পারা জরুরি,কোন উস্কানি তে পা দিয়েন না ভুল করে বা ইচ্ছে করেও।
এই বাংলা সবার,এখানে হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ সবার অধিকার আছে। এটা কোন মধ্যযুগীয় দেশ নয়,এক পক্ষের অধিকার লঙ্ঘন হলে আরেক পক্ষের সেটা দেখার দায়িত্ব নিবে।সেটা বিচারের দায়িত্ব এই দেশের আইন আদালতের।তাই এক পক্ষ আরেক পক্ষের উপর ঝাপিয়ে পরিয়েন না, সবাই নিরাপদে থাকুন,নিরাপদে রাখুন।
তৌফিক প্রান্ত, নবদূত প্রতিনিধি।