নবদূত রিপোর্ট:
‘সাউথ এশিয়ান প্রফেশনাল বক্সিং ফাইট নাইট- দ্য আল্টিমেট গ্লোরি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক বক্সিং প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সুরো কৃষ্ণ চাকমা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বক্সিং ফাউন্ডেশনের (বিবিএফ) আয়োজনে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের মোট ১৪ জন বক্সারের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ৪ চার রাউন্ডের খেলায় নেপালের মাহেন্দ্র বাহাদুর চান্দকে পরাজিত করে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পেশাদার বক্সিং-এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেন সুরো কৃষ্ণ চাকমা। আন্তর্জাতিক পেশাদার বক্সিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে তিনিই প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী।
সুরো কৃষ্ণ চাকমা জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। থাকতেন হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনের ৪১২ নাম্বার রুমে। তার এই অর্জনে অভিনন্দন জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা।
তার সাফল্যের পেছনে নিজস্ব সাধনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অবদানকে বড় করে দেখছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ, খেলার মাঠ, জিমনেশিয়ামসহ হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় বর্তমান তাকে এই অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে বলে অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার দুমাস আগ থেকে খুব ডিসিপ্লেনে চলতে হয়। সকালে উঠে দৌড়ানো, বিকেলে ফুটবল খেলা, নির্ধারিত খাদ্যাভাস ঠিক রাখতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকতেও আমি এসব মেইনটেইন করতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে গুলিস্তানে বক্সিং ফেডারেশন ছিল সেখানে হেঁটে যেতাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামও আমাকে সাহায্য করেছে। পাঁচ বছর হলে ছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আমাকে বেশ ভালোই সাহায্য করেছে।
কৃষ্ণ চাকমার বক্সিং ক্যারিয়ারের শুরুটা হয় সপ্তম শ্রেণিতে থাকতেই। রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় এই উদ্যমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী ২০০৭ সালে বিকেএসপিতে কোচ আবু সুফিয়ান চিশতির অধীনে বক্সিং-এ ভর্তি হন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৫ জন কোচের অধীনে কাজ করেছেন।
ছয় বছর কঠোর সাধনার পরে বক্সিং-এ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ গেমসে গোল্ড মেডেল অর্জন করেন, ২০১৪ সালে দেশের মধ্যে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হন। নেপালে অনুষ্ঠিত ‘সাউথ এসিয়ান গেমস ২০১৯’- এ এমেচার বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ পদক পান। এছাড়াও ২০১৮ সালে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে দুটো খেলায় জয়লাভ করেন। তার নিজস্ব প্রথম আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ছিল ২০১৪ সালের স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমস। এর বাইরেও ২০১৫ সালে দেশের মধ্যে সেরা বক্সার নির্বাচিত হয়ে লন্ডনে ছয়মাসের একটি ট্রেনিং করার সুযোগ পেয়েছেন।