প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধনে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন,
স্বাধীনতা মানে কি শুধু একটি পতাকা, একটি মানচিত্র আর একটি ভূখন্ড? পাকিস্তান আমলেও সাংবাদিকরা লিখতে পারতো, কিন্তু আওয়ামীলীগের আমলে লিখতে পারেনা। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের কি অপরাধ যে তাকে ভোর রাতে বাড়ি থেকে তুলে আনতে হবে? বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হচ্ছে। সাংবাদিক ভাইদের বলতে চাই, আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা কলমের লড়াই চালান, আমরা রাজপথে লড়াই করছি। দ্বিমুখী লড়াইয়ের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদ হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আসলেই কি আমরা স্বাধীন? আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, লেখার স্বাধীনতা নেই, সভা সমাবেশের স্বাধীনতা নেই। এটা কি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদাহরণ হতে পারে? বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার দেশের মানুষ পেট ভরে ভাত না পেলে এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে, মা-বোনেরা কাপড় না পেলে স্বাধীনতা পূর্ণ হবেনা, যুবকদের কর্মসংস্থান না হলে স্বাধীনতা পূর্ণ হবেনা। তাহলে আজকে কেন আমরা বলতে পারছিনা, “এই স্বাধীনতা দিয়ে কি করুম? সংসার চালাতে ঘাম ঝরে যায়। আমাগো মাছ, মাংস ও চাইলের স্বাধীনতা লাগব!”
রাশেদ খান আরও বলেন,আমরা অনতিবিলম্বে শামসুজ্জামানের মুক্তি এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার প্রত্যাহার চাই। সাগর রুনী হত্যার বিচার সরকার কেন করেনা? এতো এতো সাংবাদিক কেন গুম হয়, জেলে যেতে হয়, মামলা কেন হয়? ফ্যাসিবাদ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কারও বাঁচার স্বাধীনতা থাকবেনা। সুতরাং রাজপথে নামুন। গণআন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে। আগামীতে ১৪ ও ১৮ মার্কা নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবেনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে। জাতিসংঘ বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নির্বাচন চায়। আমরাও বাংলাদেশে ভোট ও ভাতের অধিকার চাই। যারাই ভোটচুরি করে তারা স্বাধীনতা বিরোধী। সুতরাং এই ভোটচোর স্বাধীনতা বিরোধী আওয়ামীলীগের পতন ঘটাতে হবে এবং জনগণের সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে। সেই লড়াইয়ে গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে রয়েছে, আপনারা আমাদের পাশে থাকুন, জনগণের মুক্তি মিলবে, মাছ, মাংস ও চাইলের স্বাধীনতা ফিরবে, ইনশাআল্লাহ।
গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশ খাতা কলমে স্বাধীন দেশ হলেও এখানে নুন্যতম স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। না আছে ভাত এবং ভোটের স্বাধীনতা না আছে কলমের স্বাধীনতা। কেউ সত্য প্রকাশ করলেই তার নামে দেওয়া হয় আইসিটি নামক কালো আইনের মামলা। প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস গত ২৬শে মার্চ যে প্রতিবেদন করেছেন সেটি কোন অবস্থায় মিথ্যা নয়। আমরা দেখলাম সেই সাংবাদিককে আইসিটি আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো যা মুক্ত গণমাধ্যমের গলা টিপে হত্যা করার শামিল। প্রথমআলোর সম্পাদক স্বনামধন্য সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর নামে দেওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি চাই, একইসাথে আইসিটি নামক কালো আইন বাতিল করতে হবে।।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন,প্রথম আলোর কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী দুর্ঘটনায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হবার ঘটনায় যদি কর্তৃপক্ষকে দোষী সাব্যস্ত হয়, সুনামগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণবহরের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া ত্রাণে নিহত ব্যাক্তির জন্যেও তিনি দায়ী থাকার কথা। শামসুজ্জামান ভাই এর সাংবাদিকতায় কোন অসত্য উপস্থাপনের মত কিছু দেখি নাই, ছবি সেকশনে যে ছবি এসেছে তা ক্যাপশনের ভুল হলেও পুরোপুরি অসত্য বলা যায় না।
গণ অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক কৃষিবিদ মোঃ শহিদুল ইসলাম ফাহিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব কুমার পোদ্দার, সাদ্দাম হোসেন,শাকিলউজ্জামান, যুগ্ম সদস্যসচিব আতাউল্লাহ, আব্দুজ জাহের,জিলু খান,সদস্য তোফাজ্জল হোসেন,ঢাকা মমহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব ঈসমাইল হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান,ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব,শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুহেল রানা সম্পদ প্রমুখ।