তৌফিক প্রান্ত, রাজশাহী:
এই দেশের মানুষের কাছে ১৪ই এপ্রিলের দিন উদযাপন নিয়ে কোন সমস্যা ছিলো না। বরং এই দিনটাই ছিলো সকল ধর্মীয় বিভেদ ভুলে বাঙ্গালিদের একটি জাতীয় উৎসব। বাঙ্গালি মুসলমান সহ সবাই এটি পালনও করছে।
কিন্তু ইসলামের যেকোন বিষয়েই মুসলমান কখনোই তার ইসলামিক মোরাল কোড ও মৌলিক বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু সমর্থন করেনা, তার ইসলামিক মাইন্ডসেটের সাথে এলাইন করেনা এরকম কিছু কোনভাবেই সে নিজের উৎসব বলে ভাবতে পারেনা।
মুসলমানদের মৌলিক বিষয় কোন মানুষ এর তৈরি মূর্তিকে পূজা না দেওয়া, এক আল্লাহ ব্যতীত কোন দিন কারো মঙ্গল করতে পারে এটা সে কোনভাবেই মানতে পারে না, সে যতটুকুই ইসলাম মেনে চলুক, এটা তার ইসলামিক মোরাল কোডের সাথে কোনভাবেই যায় না।
যখন ১৪ এপ্রিল দিনটা আনন্দ শোভাযাত্রা হিসেবে পালিত হয়ছে, তখন তার এই দিন নিয়ে কোন প্রব্লেম ছিলো না, বরং বাংলার মুসলমানরাই সেখানেই নিজেদের ইচ্ছাই অংশগ্রহণ করে করে আনন্দ করছে, আগে গ্রামাঞ্চলের দিকে হালখাতা হয়ছে, পিকনিক হয়ছে, মানুষ রাতের বেলা গরম ভাত পানিতে ভিজিয়ে অন্তত সকালে পান্তা খেয়েছে।
একটু নিজে ভাবেন তো, এখন যখন গ্রামের খুবই সাধারণ মুসলমান শুনে যে এটা মঙ্গল শোভাযাত্রা, তখন তার মাথায় প্রথমেই কি চিন্তা আসবে, তার মুসলমান সত্তার সাথে কি কোনভাবে এটা এলাইন করে? তার কাছে বিষয়টা ধর্ম থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো গুরুতর পাপ হয়ে উঠে। সে যখন এই বানানো আর্টগুলো তখন তার মাথায় আসে এসব মূর্তি কিনা। তার পাপ হয়ে যাবে কিনা।সে কি এই বিষয়টাকে কখনো নিজের বলে ভাবতে পারে? পারা তো সম্ভবই নয়।
যেখানে শুধু আনন্দ শোভাযাত্রা শব্দটা রাখলেই এই উৎসবটা সবার হতে পারতো, সেখানে এই দেশের কালচারাল এলিটেদের জাতে উঠতে যেয়ে তাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা শব্দটা ব্যবহার করতে হয়, কিন্তু তারা ভাবেও না যে এই দেশের মুসলমান বাঙ্গালিরা এই শব্দটাকে ধারণ করতে পারবে কিনা। কিন্তু এখন যখন দেখতেছে মুসলমানরা মেনে নিচ্ছে না, তখন তাদের হম্বিতম্বি শুরু হয়ছে যে এরা অশিক্ষিত, কমন সেন্স নাই। কিন্তু এই কালচারাল এলিটদের মাথায় এটা কোনভাবেই ঢুকে না যে তাদের তৈরি শব্দ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ মুসলমান মাইন্ডসেটের সাথে কোনভাবেই এলাইন করে না, তার ইসলাম এর মৌলিক বিষয় এর সাথে যা সাংঘর্ষিক সেটা সে কোনভাবেই ধারণ করতে পারেনা। একটা জাতীয় উৎসবকে কিভাবে নষ্ট করে ফেলা যায়, তার একটা উদাহরণ হয়ে থাকলো এই ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।