বিলাল হোসেন মাহিনী :
নোবেলজয়ী একমাত্র বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অপরজন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম কিংবদন্তি ডা. জাফরুল্লাহ, আর অন্যজন ক্ষুদ্রঋণের অন্যতম পথিকৃৎ স্যার ফজলে হাসান আবেদ। হ্যাঁ, আমরা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় দাঁড় করাতে অনন্য ভূমিকা রাখা বাংলাদেশি তিন আইকনের কথা বলছি। আমাদের আজকের নিবন্ধে মহান তিন বাংলাদেশির ছোট ছোট গল্প ও তাঁদের অসামান্য অবদান এবং অর্জনের কথা জানবো।
১.অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (জন্ম: ২৮ জুন, ১৯৪০) একমাত্র বাংলাদেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক কিভাবে গ্রামীণ অর্থনীতির চাঙ্গা করতে অসমান্য অবদান রাখতে পারেন; তিনি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমি নিজে সাক্ষী, গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষা ঋণে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত করতে পেরেছি। এই মহান মানুষটি ক্ষুদ্রঋণ নামক অর্থনীতির জনক হিসেবে সারাবিশ্বে সমাদৃত। প্রতিষ্ঠা করেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের মতো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যে ব্যাংকের মালিকানা গ্রামের অসচ্ছল-দরিদ্র মানুষের। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত প্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। শুধু তাই নয়, ড. ইউনূস বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার সহ অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। এই মহান মানুষটির মাধ্যমে বিশ্ব আরেকবার বাংলাদেশকে চিনতে পারলো। যেমনিভাবে এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে চিনেছিলো বিশ্ব। ড. ইউনুস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬২টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭) লাভ করেন। এছাড়াও গাল্ড মেডেল অফ ওনার এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৯)-সহ জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন অব গ্লোবাল চেঞ্জ’ পুরস্কার (২০২১) লাভ করেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস অর্থনীতি, ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসায়সহ নানা বিষয়ে অসংখ্য বই লিখেছেন। তাঁর বই ও গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংস্থায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
২. স্যার ফজলে হাসান আবেদ (২৭ এপ্রিল ১৯৩৬ – ২০ ডিসেম্বর ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশি সমাজকর্মী এবং বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা। সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অসামান্য ভূমিকার জন্য তিনি র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার, স্প্যানিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, লিও তলস্তয় আন্তর্জাতিক স্বর্ণ পদক, জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থার মাহবুবুল হক পুরস্কার এবং গেটস ফাউন্ডেশনের বিশ্ব স্বাস্থ্য পুরস্কার এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের নোবেল বলে খ্যাত ‘ইয়াইদান’ পুরস্কার লাভ করেছেন। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনের ‘বিশ্বের ৫০ সেরা নেতার তালিকা’য় তাঁর ছিল। অশোকা তাঁকে বৈশ্বিক সেরাদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। বাংলাদেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দারিদ্র বিমোচন এবং দরিদ্রের ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৯ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে সবচেয়ে সম্মানিত ‘অর্ডার অব সেন্ট মাইকেল অ্যান্ড সেন্ট জর্জের ‘নাইট কমান্ডার’ উপাধিতে ভূষিত করে। ২০১৯ সালে নেদারল্যান্ডের রাজা তাঁকে ‘নাইটহুড’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাধীন বাংলাদেশের দরিদ্র, অসহায়, সর্বহারা মানুষের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কল্পে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে বিশ্বের ১২টি দেশে ব্র্যাকের লক্ষাধিক কর্মী প্রায় তেরো কোটি মানুষের জীবনে উন্নয়নে নিরলস কাজ কাজ করে যাচ্ছে। ফজলে হাসান আবেদের সুযোগ্য নেতৃত্বই অজ¯্র প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ব্র্যাকের অনন্য সাধারণ এই অর্জনকে সম্ভব করে তুলেছে। বস্তুত প্রতিষ্ঠাতার স্বাপ্নিক দূরদৃষ্টি, অদম্য সাহস এবং গতিশীলতা ব্র্যাকের ক্রম অগ্রযাত্রা, নব নব নিরীক্ষা ও সম্প্রসারণের নিরন্তর অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে গেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও স্যার ফজলে হাসান আবেদের দেখানো পথে পরবর্তীতে ইসলামি ব্যাংকসহ প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক সংস্থা ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। উন্নয়ন খাতে তার সমসাময়ক আরেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুস তাকে স্মরণ করে বলেন, ‘মানুষের জীবন পরিবর্তনে যত কিছু লাগে, প্রত্যেক কাজে তিনি শরীক হয়েছেন। শুধু কয়েকটা ছোটখাটো দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য নয়, সকল মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে গেছেন ফজলে হাসান আবেদ, এবং তিনি সফল হয়েছেন।’ ড. ইউনুস মনে করেন বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের প্রায় সবাই কোন না ভাবেই স্যার আবেদের সঙ্গে জড়িত।
৩.
সর্বশেষ আমরা একমন একজন মানুষের কথা জানবো, যিনি নিজেকে নিঃস্ব করে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের জন্য অবিরাম কাজ করে গেছেন। তিনি আর কেউ নন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি কল্যাণকর রাষ্ট্র ও সমাজের চিন্তা করেছেন। চাইতেন সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও সমাজিক ন্যায় বিচারের বাংলাদেশ। রাজনৈতিক কাঠামোতে নিজেকে না জাড়িয়ে প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবেছেন যিনি। তিনি ছিলেন সত্যিকার বুদ্ধিজীবী। দেশকে বদলাতে, সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাওয়া তরুণদের জন্য তিনি বড় অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। এ কথা বলতে দ্বিধা নেই আজকের ভিপি নূর, যিনি এতো অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন, একটি রাজনৈতিক দলের (গণ অধিকার পরিষদ) সদস্য সচিব হতে পেরেছেন, পেরেছেন তরুন রাজনীতিকদের আইকন হতে, মূলতঃ এই সবকিছুর পেছনের মানুষটি ডা. জাফরুল্লাহ। শুধু তাই নয়, ডা. জাফরুল্লাহ, ফরহাদ মাজহার, ড. আসিফ নজরুল, ড. লতিফ মাসুম ও ড. দিলারা চৌধুরীসহ বিশ্ববিখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের দিক নির্দেশনায় গড়ে উঠেছে তারুণ্য নির্ভর রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টিসহ কয়েকটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক প্লাটফর্ম।
ডা. জাফরুল্লাহ স্যার স্মরণে কবি ফরহাদ মজহার বলেন, দরিদ্রদের প্রতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পক্ষপাত ছিল। তিনি দরিদ্রদের জন্য কম টাকায় ওষুধ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তাঁকে বুঝতে হলে, জানতে হলে তাঁকে নিয়ে পড়তে হবে, গবেষণা করতে হবে। তিনি ছিলেন সত্যিকার বুদ্ধিজীবী। দেশে এখন বুদ্ধিজীবীদের অন্তঃসারশূন্য অবস্থা তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে বাংলাদেশকে বদলাতে হবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী (২৭ ডিসেম্বর ১৯৪১-১১ এপ্রিল ২০২৩) একজন বাংলাদেশি চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য সক্রিয়তাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৮২ সালে প্রবর্তিত বাংলাদেশের ‘জাতীয় ঔষধ নীতি’ প্রণয়ন ও ঘোষণার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস-এ এফআরসিএস পড়াকালীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চূড়ান্ত পর্ব শেষ না-করে লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার নিমিত্তে আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন এবং এরপরে ডা. এম এ মবিনের সাথে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট “বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল” প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস গড়েছেন গ্রামীণ ব্যাংক, ফজলে হাসান গড়েছেন ব্র্যাক আর ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী গড়েছেন গণস্বাস্থ্য। তবে প্রামীণ ব্যাংক কিংবা ব্র্যাকের মত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর গণস্বাস্থ্য বিশ্ব অতটা পরিচিতি পায়নি। কারণ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাকি দুইজন থেকে বেশ অনেকটা ভিন্ন ধাঁচের খেপাটে মানুষ। এর প্রমান পাকিস্তানের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলা, এফআরসিএস পড়া ছেড়ে যুদ্ধাহতদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল করা, তারপর আবার লন্ডনে ফিরে না যাওয়া ইত্যাদি। তাছাড়া জীবনের কখনো ক্ষমতাবানদের পক্ষে না থেকে ক্ষমতাহীনদের পাশে দাঁড়ানো তাঁর চিরচারিত স্বভাব ছিল। বৃদ্ধ বয়সেও করোনার সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের জন্য কিছু করার কত চেষ্টা করেছেন। করতে গিয়ে কত নাজেহাল হয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। এখন কথা হলো আমাদের স্বাধীন দেশ যারা চালান, তাদের হাতে কি এমন একটি মানুষও তৈরী হয়েছে? শেষ বয়সে তিনি সবচেয়ে বেশি সময় দিতেন তরুণ ও যুবকদের। বিশেষতঃ যারা অধিকারের কথা বলে, যারা দেশে নতুন ধারা নির্মান করতে চান, তাদের সময় দিতেন বেশি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরি সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য : চট্টগ্রামের সন্তান জাফরুল্লাহ’র বাবার শিক্ষক ছিলেন স্বয়ং বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন। ছাত্রকালেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের দুর্নীতির বিরুদ্ধে করেছিলেন সংবাদ সম্মেলন। ’৬৭ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস পড়া ছেড়ে যুদ্ধাহতদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। পাকিস্থানি বাহিনীর নির্মমতার প্রতিবাদে লন্ডনের হাইডপার্কে যে কয়জন বাঙ্গালী পাসপোর্ট ছিড়ে আগুন ধরিয়ে রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত হয়েছিল তাদের একজন ড. জাফরুল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক সহায়তার জন্য বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী প্রবাসী বাঙ্গালিদের কাছ থেকে ১০ লাখ পাউন্ড চাঁদা যোগাড় করেছিলেন। তিনি কাজটি করেছিলেন ড. জাফরুল্লাহর পরামর্শে। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বইয়ের ১৬১ ও ১৬২ পৃষ্ঠায় ড. জাফরুল্লাহ ও ডা. মোবিনের পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার ঘটনাটি বিস্তারিতভাবে লিখেন। যুদ্ধকালে হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্স না থাকায় ড. জাফরুল্লাহ নিজে নারী স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ দেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ড. জাফরুল্লাহ গ্রামে গিয়ে শুরু করেন স্বাস্থ্যযুদ্ধ। ফিল্ড হাসপাতালটিকেই কুমিল্লাতে স্বাধীন দেশের প্রথম হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলেন। পরবর্তীতে ঢাকার ইস্কাটনে হাসপাতালটি পুনঃস্থাপিত হয়। কিন্তু গ্রামকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু রূপে গড়ে তোলার জন্যে হাসপাতালটিকে ঢাকার অদূরে সাভারে ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালটিকে ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামে নামকরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাভারে হাসপাতালটির জন্য ৩১ একর জমিও বরাদ্দ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ডা. জাফরুল্লাহ বাকশালে যোগ দিতে বঙ্গবন্ধুর অনুরোধ যেমন উপেক্ষা করেছিলেন, তেমনি জিয়াউর রহমানের দেয়া মন্ত্রীত্বের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ৪ পৃষ্ঠার একটি চিঠির মাধ্যমে। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এরশাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাবও! গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পর তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান ১৯৮২ সালের জাতীয় ঔষুধ নীতি। স্বাধীনতার পর স্বাস্থ্যখাতে যেটাকে বিবেচনা করা সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হিসেবে। তাঁর প্রচেষ্টায় আমদানি ওষুধের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২২৫-এ। বর্তমানে ৯০ শতাংশ ওষুধই দেশে তৈরি হচ্ছে এবং বাংলাদেশ একটি ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে এই মানুষটির অবদান অসামান্য। ডা. জাফর স্যার স্বাস্থ্যনীতির সাথে জড়িত থাকায় বি.এম.এর স্বার্থে আঘাত লাগে। তাই বি.এম.এ ১৯৯২ সালে তাঁর সদস্যপদ বাতিল করে। বিনা বিচারে ড. জাফর স্যারের ফাঁসি চেয়ে পোস্টারও সাঁটায় তারা। বাংলাদেশিরা ড. জাফরুল্লাহ স্যারকে না চিনলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকই চিনেছে এই লোকটাকে। বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ ঘোষণা করে ড. জাফরুল্লাহকে। মহান মুক্তিযুদ্ধ করে এবং গণমানুষের জন্য কাজ করেও ড. জাফরুল্লাহরা হন বিতর্কিত। কারন, উনারা চাটুকারিতা করতে জানেন না, দালালী করতে জানতেন না। আমরা প্রায়ত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও স্যার ফজলে হাসান আবেদেও আত্মার শান্তি কামনা করছি।
বিলাল হোসেন মাহিনী
নির্বাহী সম্পদক : ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র, যশোর।