Friday, November 15, 2024
Homeজাতীয়ইউটিউব দেখে চায়না কমলার চাষ, ক্ষোভে গাছ কাটছেন চাষি

ইউটিউব দেখে চায়না কমলার চাষ, ক্ষোভে গাছ কাটছেন চাষি

নবদূত ডেস্ক:

খানিকটা সচ্ছল জীবন পেতে তিন বছর আগে নিজের জমানো ও ঋণের সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে চায়না কমলা চাষ শুরু করেন গোলাম রসুল। এ বছর গাছ ভর্তি ফল আসে। আশায় বুক বাঁধেন তিনি। কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। মুহূর্তেই আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়। বাজারে এ কমলার চাহিদাই নেই। একজনের সহযোগিতায় কিছু ফল বাজারে পাঠালেও অর্ধেকও বিক্রি হলো না। চায়না কমলা চাষ করতে গিয়ে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার এমন অনেকেরই স্বপ্ন ভেঙেছে।

কমলা বিক্রি না হওয়ার কারণ হিসেবে চাষিরা জানিয়েছেন, এ কমলার মধ্যে বীজ রয়েছে। এ ছাড়া গাছেই কমলার রস শুকিয়ে যায়। খেতেও সুস্বাদু নয়। খাওয়ার পর গলায় তেঁতো লেগে থাকে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের মাসলিয়া গ্রামের গোলাম রসুল জানান, বছর তিনেক আগে তিনি একটি ইউটিউব চ্যানেলে চুয়াডাঙ্গার জীবন নগরের নিধিকুন্ডু গ্রামের ওমর ফারুকের নার্সারিতে করা চায়না কমলার চাষ নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখেন। প্রতিবেদন দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন ঠিকই। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। এমন সময় তার নজরে আসে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষি অফিসার তালহা জুবাইর মাসরুরের ইউটিউব চ্যানেল কৃষি বায়োস্কোপ। ওই চ্যানেলের একটি ভিডিওতে বলা হয়, জীবন নগরে সফলতার সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে চায়না কমলার চাষ হচ্ছে। একশ’ গাছ থেকে চার লাখ টাকা আয় করা সম্ভব বলেও দাবি করা হয় ওই ভিডিওতে। মূলত ওই ভিডিও দেখার পরই সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে চায়না কমলার চাষ করে এখন লাখ টাকার লোকসান গুনছেন গোলাম রসুল।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের কৃষক আসাদ শেখ জানান, তিনিও ইউটিউবের ভিডিও দেখে চায়না কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হন। ১১ কাঠা জমিতে চায়না ও ২৬ কাঠা জমিতে মান্দারিন কমলা চাষ করে তার প্রায় তিন লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বিঞ্চুপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামও একইভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে চার বিঘা জমিতে চায়না কমলা লাগান। ফল আসার পর তার পরিচিত ঢাকার এক ব্যাপারি তাকে জানান, এ কমলার মান ভালো নয় বলে তারা ঢাকায় বিক্রি করতে পারেন না। এ বছরের অক্টোবরে তাই সব গাছ কেটে ফেলেন সাইদুল। এতে তার প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান।

RELATED ARTICLES

Most Popular