Friday, November 15, 2024
Homeরাজনীতিসার্চ কমিটি নয়, আমাদের ফোকাস নির্বাচনকালীন সরকার : নুর

সার্চ কমিটি নয়, আমাদের ফোকাস নির্বাচনকালীন সরকার : নুর

নবদূত রিপোর্ট:

নতুন আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব নয় উল্লেখ করে, সার্চ কমিটি নয় বরং নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করার কথা জানিয়েছেন নবগঠিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সার্চ কমিটি প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমনটি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’র (ডাকসু) সাবেক এই সহ-সভাপতি (ভিপি)।

নুরুল বলেন, যেহেতু সার্চ কমিটি আইনটাই করা হয়েছে সরকারি দলের ইচ্ছেমতো, সেখানে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য যারা আছে তাদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই যে চলমান রাজনৈতিক সংকট এই সংকট নিরসনে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ যেভাবে মতামত দিয়েছিল, সেগুলো উপেক্ষা করে আইনটা করা হয়েছে। আইন যেহেতু করেছে সরকারের পছন্দমতো, সে আইনে সরকারের পছন্দের বাইরে গিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, আইনটাই যেখানে জনগণ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিগবর্গকে উপেক্ষা করে করা হয়েছে, সেখানে সার্চ কমিটি নিয়ে ভালো কিছু আশা করার প্রশ্নই ওঠে না। তাই আমরা সার্চ কমিটি নিয়ে খুব একটা কথা বলতে চাই না। বরং আমাদের মূল ফোকাসের বিষয়টা, সেটা হচ্ছে একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার। ওই জায়গাটাতেই ফোকাস রেখে আমাদের আন্দোলন, সংগ্রাম, আলাপ-আলোচনা চালাতে চাই।

সার্চ কমিটিকে আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাথে তুলনা করে নুর বলেন, সরকার সার্চ কমিটি একটা আইন করেছে, সেখানে সরকারের যদি আন্তরিকতা থাকতো তাহলে কিছু নিরপেক্ষ ব্যক্তিদেরকে সংশ্লিষ্ট করে একটা সুন্দর কমিটি চাইলে করতে পারতো। তাদের শুরুতেই গলদ হয়ে গেছে। একেবারেই পুরো আওয়ামী ঘরানার লোকজনকে দিয়ে এটা একটা আওয়ামী লীগের উপকমিটির মতো হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এই কমিটির প্রধান হচ্ছেন একজন বিচারপতি তার বাবা সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য (এমএলএ) ছিলেন, তার ভাই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ছিলেন। উনি গত কমিটিতেও সার্চ কমিটিতে কাজ করেছেন। গত দুইটা কমিটি কী নিরপেক্ষ যোগ্য লোকদের বাছাই করেছে সেটা তো সারা দেশ দেখেছে। আবার তাকেই করা হয়েছে প্রধান। তাছাড়া রাষ্ট্রপতি যে দুইজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে মনোনীত করেছেন তারাও আপাদমস্তক আওয়ামী ঘরানার লোক।

সার্চ কমিটি লোক দেখানো প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী ঘরানার লোক কী আওয়ামী ঘরানার বাইরের কাউকে নিয়োগ দেবে? এটা কখনোই করবে না। এটা শুধুমাত্র লোক দেখানো একটা প্রক্রিয়া এবং সময়ক্ষেপণ করা। এটা দিয়ে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আশা করা সম্ভব না। বরং গত কমিটিতে মাহবুব তালুকদারের মতো একজন লোক ছিল। এই সার্চ কমিটির লোকদের দেখেই বুঝা যায় সেরকম কারো আসার সম্ভাবনা নেই।

নিজেদের আন্দোলন-সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আমরা অনেক আগে থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে সরকারের বাইরে যারা আছে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আমরা কিভাবে একটা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা জাতীয় সরকার সে দাবিটা আদায় করতে পারি। সেক্ষেত্রে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম বিভিন্নভাবে চলছে।

এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরে বিশেষ করে এখানকার বিদেশীদেরও বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসনের পক্ষে একটা অবস্থান আমরা লক্ষ্য করছি। তাদেরও দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য একটা তৎপরতা আছে। যেটা আমাদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটা ভালো দিক- উল্লেখ করেন নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, এখন আমরা ভাবছি যে, সরকারের ওপর চাপ তৈরি করে কিভাবে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার আদায় করা যায়। আমরা এই জায়গায় ফোকাস রাখতে চাই। যেখানে এখন আর সার্চ কমিটি, নির্বাচন কমিশন এগুলো নিয়ে আলোচনা করে নতুন করে মানুষের দৃষ্টিকে অন্য খাতে ফেরাতে চাই না। আমরা এখানে সময় নষ্ট করতে চাই না, আমাদের যে একদফা জনগণের মুক্তি আন্দোলন সেটা নিয়ে ভাবছি।

RELATED ARTICLES

Most Popular