ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক জটিলতায় সৃষ্ট নানা রকম হয়রানি বন্ধ ও ৮ দফা দাবিতে আমরণ অনশনরত ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ গুরুতর অসুস্থ হলেও ওষুধ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। মঙ্গলবার দুপুরে অনশন শুরু করেন তিনি।
জানা যায়, রাত দেড়টার দিকে অবস্থা গুরুতর হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায় সহপাঠীরা তবে তাতে তিনি রাজি না হলে ডাক্তার নিয়ে আসেন তারা। পরে ডাক্তারের দেওয়া প্রেসপিকশন অনুযায়ী ওষুধ আনা হলেও তিনি তা গ্রহণ করেন নি।
হাসনাতের সাথে সংহতি প্রকাশ করে অবস্থান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন, রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে হাসনাত ভাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পরে। কিন্তু তবুও উনি নিজ অবস্থান থেকে সরে যান নি। অনেক জোর জবরদস্তি করেও ওনাকে আমরা নিজ অবস্থান থেকে সরাতে পারিনি। এম্বুলেন্স আসলেও উনি হাসপাতালে যাবেন না এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাধ্য হয়ে শেষমেশ আমাদের ডাক্তার ডেকে আনতে হয়। ডাক্তার জানান যে,তার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং যেকোনো মুহূর্তে খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে।ডাক্তার কিছু মেডিসিন ও গ্লুকোজ গ্রহণের কথা বললেও হাসনাত ভাই সকল প্রকার ঔষধও সেবন করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন
আরেক শিক্ষার্থী রিফাত রশিদ বলেন, ডিজিটাল যুগে সনাতনী পদ্ধতি ও ছাত্র হয়রানি বন্ধের দাবিতে ৮ দফা দাবি নিয়ে আমরণ অনশনে বসেছে। তার শারীরিক অসুস্থতাসহ সংশ্লিষ্ট যেকোনো সমস্যার জন্য ঢাবি কর্তৃপক্ষকে এর দায়ভার নিতে হবে। অনশনের ২০ ঘন্টার অধিক অতিক্রম হওয়া সত্বেও কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স আসে নাই।কেনো? একটা শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম হয়রানি আমাদের জন্য কি লজ্জাজনক নয়? এটা কি আমাদের দেশের জন্য লজ্জাজনক নয়?
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমি কোনো কিছুই গ্রহণ করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত না উপাচার্য দাবিগুলো মেনে নিয়ে দাবি পূরণে সময় বেঁধে দেয়। আমার শারিরীক অবনতির দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।
গত ৩০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনে আট দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন হাসনাত। সেসময় তিনি উপাচার্যকে স্মারকলিপি এবং দাবি পূরণে ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ফের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। আর আজ উপাচার্যের কাছ থেকে আশ্বাস না পেয়ে আমরণ অনশন শুরু করেন।