Saturday, September 21, 2024
HomeUncategorizedজারি সারির বদলে এখন ওয়াজ মাহফিলের বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা : হানিফ

জারি সারির বদলে এখন ওয়াজ মাহফিলের বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা : হানিফ

নবদূত রিপোর্ট:

আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, গ্রাম বাংলার শত বছরের ঐতিহ্য জারি-সারি ভাটিয়ালি গানের বদলে এখন সমাজের মধ্যে তার বদলে জায়গা করে নিয়েছে ওয়াজ মাহফিলের নামে বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা।

তিনি বলেছেন, দীর্ঘকাল ধরে আমাদের সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা সম্প্রীতির বন্ধন ছিল, সেটি হারিয়ে গেছে। গ্রাম বাংলার শত বছরের ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। আজকে গ্রামে যাত্রা নেই, নাটক নেই, পালা গান নেই, জারি-সারি ভাটিয়ালি, পুথি গান এগুলো উঠে গেছে প্রায়, এগুলো সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন সমাজের মধ্যে তার বদলে জায়গা করে নিয়েছে ওয়াজ মাহফিলের নামে বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার প্রতিবাদে গৌরব ৭১ নামে একটি সংগঠনের প্রতিরোধ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার দাবি জানানো হয়।

মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আমি দেখলাম বিএনপির মহাসচিব বক্তব্য দিয়েছেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে বিভেদ সৃষ্টি করেছে, সমাজের মধ্যে এই ঘটনাগুলো ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে। কি নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। কারা এই দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে? বিনষ্টের বীজ বপন করেছেন?

জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশে পাকিস্তানের প্রেতাত্মা জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন। এই স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন।

তিনি বলেন, আজকে সমাজ থেকে সংস্কৃতি চলে গেছে এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সকল সম্প্রদায়ের মানুষ রক্ত দিয়েছিল, জীবন দিয়েছিল, ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছিল। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ আজকে আমাদের মধ্য থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে আমরা এ বাংলাদেশ থেকে ধর্মান্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর চিরতরে নিপাত করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা ধর্মপ্রাণ হতে চাই, আমরা ধর্মান্ধ হতে চাইনা। ধর্মান্ধের মাধ্যমে সমাজকে কলুষিত করা হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ধর্মকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, মা-বোনদের উপর নির্যাতন করা হয়েছিল। আজকে ধর্মের অপব্যাখ্যা করে অন্য সম্প্রদায়ের ধর্ম পালনে বাধা দেয়া হয়েছে, যেটা কখনো বরদাস্ত করার মতো নয়।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে উস্কানি দেয়া হয়েছে। ২০১২ সালে রামুর বৌদ্ধমন্দির, নাসিরনগর, পাবনার সুজানগরসহ সুনামগঞ্জের শাল্লায় যেসব লুটপাট অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল সেগুলোর বিচার এখনো শেষ হয় নাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করব, অতি দ্রুত এই ঘটনাগুলোর বিচার করুন। এই ঘটনাগুলোর বিচার বিলম্ব হওয়ার কারণে বারবার মৌলবাদী শক্তিগুলো হামলা করার সাহস পাচ্ছে। আমি অনুরোধ করব আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুসরণ করুন। এ পর্যন্ত যত গুলো সহিংসতা ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনার বিচার করুন। যদি সাধারণ আইনে না হয় বিশেষ আইন এর মাধ্যমে সেগুলোর বিচার করুন।

সমাবেশ শেষে সগঠনটির নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে একটি লাঠিমিছিল বের হয়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় সংগঠটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনি বলেন,আমরা শুধু শ্লোগান দিতে জানি না, বাঁশের লাঠি হাতে নিতেও জানি।

RELATED ARTICLES

Most Popular