Saturday, September 21, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনঢাবিতে পালিত হলো ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস

ঢাবিতে পালিত হলো ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস

নবদূত রিপোর্ট:

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্মরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হলো ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ‌অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এই অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন।

বুধবার সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন সংলগ্ন বটতলা পাদদেশে এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান পালিত হয়। এ সময় সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বটতলায় ‘পতাকা উত্তোলন দিবস উদযাপন ২০২২’ শির্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

১৯৭১ সালের ২ মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হলে ঢাকার রাজপথ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তৎকালীন ডাকসু নেতাদের উদ্যোগের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হয়। ওই সময় তৎকালীন ডাকসু ভিপি ও ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আব্দুর রব সর্বপ্রথম মানচিত্র খচিত লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করেন। ওই সময় নূরে আলম সিদ্দিকী, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, শাহজাহান সিরাজ প্রমুখ ছাত্রনেতাদের পাশাপাশি সাহসী ছাত্রসমাজ ‌উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান ‌অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘১৯৭১ সালে তৎকালীন ইকবাল হলের শিক্ষার্থীরা লাল সবুজের পতাকা বানিয়েছিল। এটিই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যেটি আমাদের ‌অনুপ্রেরনা ও শক্তিতে পরিণত হয়।’

তিনি বলেন, ‘২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তান দিবস। পাকিস্তান দিবসে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে তার পরিবর্তে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এটিই আমাদের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেটি একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পটভূমি তৈরি করে। রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক ধাপ থেকে শুরু করে চুড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত যে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করেছিল সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেকারণেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকার চেয়ে স্বতন্ত্র। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতাও বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সতন্ত্র। একটি জাতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনে যে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমি প্রয়োজন ছিল, সেটার প্রথম এবং প্রধান যোগানদাতা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আমাদের সৌভাগ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেধা, দক্ষতা ও মননশীলতাকে উপজীব্য করেই এই মহৎ কার্য সম্পন্ন করেছিলেন।’

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘১৯৭১ সালে এই জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে নির্দেশনা দেওয়া হয় যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আসন্ন। এখন আমরা এটি পালন করি এদেশের তরুন প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে অবহিত করতে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আন্দোলনের সুতিকাগার। সেসময় যে ছাত্রবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁরাই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা জাতির কাছে পৌঁছে দিতেন। আমি তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।’

তরুণ সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখনো বাংলাদেশের পাকিস্তান বানানোর মতো ষড়যন্ত্র অব্যহত আছে। এদেশের তরুণ সমাজকে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এর শকুনের বিরুদ্ধে যদি আন্দোলনের ডাক আসে সে আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার জন্য তোমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে পরিচালিত অনুষ্ঠানে প্রধান ‌অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানের সমন্বয় করেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য(শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইঁয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার।

RELATED ARTICLES

Most Popular