নবদূত রিপোর্ট:
করোনার প্রকোপ কাটিয়ে দীর্ঘ দুই বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাসমারোহে পালিত হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের প্রতিপাদ্য ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন মুখোশ, কাঠামো ও প্রতীক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সম্প্রীতির, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ বিনির্মানে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘ দুইবছর পর পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ এ অনুষ্ঠান তার প্রাণ চাঞ্চল্য, উৎসব ও আমেজের চিরাচরিত ছোঁয়া ফিরে পেয়েছে বলে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব। এটি একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনায় উজ্জীবিত উৎসব। এটি সকল জনগোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের একটি প্রাণের জায়গা, সাধনার জায়গা, সম্পৃক্ততার জায়গা। ধর্ম যার যার সেটি থাকবে; কিন্তু উৎসব ও আমেজ সকলের। মানুষের মধ্যে ধর্মের সম্প্রীতি, মানবিক বন্ধন সুদৃঢ় হোক সেই প্রত্যাশা করি।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারির কারণে আমরা দুই বছর আমাদের উৎসবটি করতে পারিনি। ২ বছর পর আমরা আবার আমাদের প্রাণে মেলা, হৃদয়ের উৎসবে হাজির হয়েছি। দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান যে শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি, সেই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য এই পহেলা বৈশাখ দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমরা মনে করি আমাদের এই ঐতিহ্যময়ী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আমরা জঙ্গিবাদ ও অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়াসহ চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর র্যাব, সোয়াট ও পুলিশ সদস্যরা তিন স্তরের নিরাপত্তা বিধান করে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিম, বিএনসিসি, রোভারস্কাউটও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট ছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রা টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বরের স্মৃতি চিরন্তন হয়ে আবার টিএসসি গিয়ে শেষ হয়।