রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউ মার্কেটের কর্মচারী-ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, গত মধ্যরাত থেকে ঢাকা কলেজ ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়িদের মধ্যে যে সংঘর্ষ ঘটছে, তা অনভিপ্রেত। দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার পরও সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে এই ঘটনা ঘটে চলেছে, আর এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনগণকে।
প্রত্যেকবারই এই ঘটনার সূত্রপাত হয় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি অথবা দোকানদারদের দুর্ব্যবহারের কারণে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর স্বার্থের দ্বন্দ্ব সংঘাতের ফলে সবসময়ই ভুক্তভোগি হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও ক্রেতা-পথচারী-যাত্রীরা। এই সংঘর্ষের ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়াতেই পারতো না যদি প্রশাসন যথাযথ সময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতো। সেটা না করে প্রশাসন ঘটনাকে হামলা ও টিয়ারগ্যাস দিয়ে মোকাবেলা করতে চেয়েছে। রাতের আঁধারে শিক্ষার্থীদের উপর এরকম ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এই এলাকায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও ছাত্রলীগের চাঁদাবাজদের দৌড়াত্মের কথা প্রশাসনের সবই জানা। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্রেতাদেরকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মুনাফা করা, দুর্ব্যাবহার করা, দোকানদার ও কর্মচারী কর্তৃক ইভটিজিং, এবং তার উপর ক্ষমতাসীন দলের মাস্তানদের চাঁদাবাজি-তোলাবাজী নিয়ে দ্বন্দ্ব, এগুলোই আসলে এই সংঘর্ষের ঘটনার মূল কারণ। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কখনও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং দিনের পর দিন এই গোষ্ঠী সংঘাতকে শিক্ষার্থী বনাম দোকানদার দ্বন্দ্ব হিসেবে উপস্থাপন করে এবং ঢাকা কলেজের ভেতরে হলে হলে ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব, অগণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদেরকে কায়েমী স্বার্থে ব্যবহার করে মূল অপরাধীদেরকে আড়াল করে দেওয়া হচ্ছে।
কলেজ বন্ধকে দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে তারা আরো বলেন, ঘটনা সামাল দিতে না পেরে ঢাকা কলেজ প্রশাসন কলেজ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের মত দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা চলছে, সেই মুহূর্তে এরকম সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানাচ্ছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।