Sunday, November 10, 2024
Homeরাজনীতিঅসহায় বন্যার্তদের পাশে গণ অধিকার পরিষদের ডঃকিবরিয়া-নুর

অসহায় বন্যার্তদের পাশে গণ অধিকার পরিষদের ডঃকিবরিয়া-নুর

সিলেট-সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। শুক্রবার সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যান গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুুরুল হক নুর। এ সময় তারা হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের সহস্রাধিক বন্যাদুর্গত মানুষের হাতে চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী তুলে দেন।

রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশে যখন ভয়াবহ বন্যার কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, সরকার তখন পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে আমোদে ব্যস্ত। পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছে, যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পদ্মার চেয়ে গভীর পানিতে এবং বেশি দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করেছে এই খরচের ১০ ভাগের এক ভাগ দিয়ে।

গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুুরুল হক নুর নবদূতকে বলেন, বন্যার শুরু থেকেই আমাদের সংগঠনের বেশ কয়েকটি গ্রুপ সিলেট অঞ্চলে বন্যা কবলিত এলাকায় কাজ করছে। এখন পর্যন্ত গণ অধিকারের পক্ষ থেকে প্রায় ত্রিশ লক্ষাধিক টাকার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সিলেট, সুনামগঞ্জের পাশাপাশি নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামেও বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।

তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার কয়েকটি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে প্রায় আড়াই শত পরিবারের হাতে গণ অধিকারের পক্ষ চাল, ডাল, চিড়া, মুড়ি, বেকারি বিস্কুট, গুড়া দুধ, স্যালাইন, ওষুধ, মোমবাতিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। এরপর বিকালে সুনামগঞ্জে একই ধরনের জিনিসপত্র বন্যা কবলিত মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে শুক্রবার প্রায় সহস্রাধিক মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। বন্যার শুরুতেই তার সংগঠনের বেশ কয়েকটি টিম সিলেটে থেকে গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন নুরুল হক নুর।

গণ অধিকার পরিষদের ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির সমন্বয়ক তারেক রহমান বলেন, বন্যার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গণ অধিকার পরিষদের কয়েকটিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। কয়েক ধাপে আমরা প্রায় দশ হাজারের বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। শুরুর দিকে আমরা বন্যার্তদের শুকনা খাবার সরবরাহ করেছি। কিন্তু আমরা যখন প্রান্তিক জনপদে গেছি তখন দেখেছি মানুষ কয়েকদিন ধরে রান্না করা খাবার খাননি। এরপর আমরা বন্যার্তদের জন্য গণখিচুড়ির আয়োজন করেছি। প্রতিবেলায় আমরা সাতশত-এর বেশি মানুষের খাবারের আয়োজন করছি। ইনশাআল্লাহ বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। 

বন্যার্ত নারীদের মাঝে কয়েক হাজার স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র সহকারী আহ্বায়ক তামান্না ফেরদৌস শিখা। তিনি বলেন, বন্যার সময় খাবারের পাশাপাশি বিশেষ করে নারীদের ঋতুস্রাব প্রক্রিয়ার জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন অত্যন্ত জরুরি। সেই প্রয়োজনীয়তা কথা চিন্তা করেই গণ অধিকার পরিষদের নারীদের একটি টিম কয়েক হাজার স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির পাশাপাশি স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ফাহিম, মাহফুজুর রহমান, পরিষদের হবিগঞ্জ সভাপতি চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান, সহকারী সদস্য সচিব শেখ খায়রুল কবির, শাহ আজাদ আলী সুমন, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু হোসেন জীবন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া জাবেদ মায়া, তামান্না ফেরদৌস শিখা, গণ অধিকার পরিষদের নবীগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ক নুরুল আমিন পাঠান, ডা. শাহ আজাদ আলী সুমন প্রমুখ।

বন্যা পরিস্থিতিতে দেশের ১১টি জেলায় মানবিক সহায়তা হিসেবে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে ১৭২০ মেট্রিক টন চাল, দুই কোটি ৭৬ লাখ টাকা নগদ সহায়তা ও ৫৮ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে মাঠ পর্যায়ে কোটি কোটি টাকার খাদ্য সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। এদিকে সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ। এ ছাড়া নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামেও বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular