আজ ১৮ই আগস্ট, বিকাল ৪টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে গুম ও সাদা পোশাকে গ্রেফতারকৃতদের স্মৃতিচারণ ও ছাত্র-জনতার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আখতার হোসেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাতের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ জাফরুল্লাহ বলেন – ‘আমেরিকা যেমন গুয়ানতানামো বে তৈরি করেছে, আওয়ামী সরকার তৈরি করেছে আয়নাঘর। কিন্তু গুয়ানতানামো বে’তে যাদেরকে নেয়া হয়, তাদের তথ্যও প্রকাশ করা হয়। কিন্তু আয়নাঘরের বন্দীদের কোনো হদিস মিলে না। অতিশীঘ্রই গুমকৃত ব্যক্তিদের ফেরত দিতে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি। আয়নাঘরকে চূরণবিচূর্ণ করে দেওয়া দরকার। প্রত্যেকটা গুমের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন কোটা সংস্কার আন্দোলনে তাঁর উপর চলা পুলিশী নির্যাতনের বর্নণা দেন এবং গুমকৃত ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দিতে দাবি জানান। নতুবা ছাত্র-জনতার প্রতিবাদের মুখে আয়নাঘর তাসের মতো ভেঙ্গে পড়বে বল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসাইন বলেন – ‘প্রোগ্রামের ঘোষণা করার পরই গতকাল আমার বাড়িতে পুলিশ গিয়ে হয়রানি করেছে। কিন্তু আমরা দমে যাই নি। আমরা আজ রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি সেই সকল মানুষদের কথা বলার জন্য যারা গুমের শিকার হয়ে ভয়ের কারণে জনপরিসর থেকে হারিয়ে যান। আমরাও যদি কোনোদিন গুম হয়ে যাই, আপনারাই কথা বলবেন, ইনশাআল্লাহ।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হুসাইন সহ নানা সময়ে গুম হওয়া ও সাদা পোশাকে গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীরা। সমাবেশটি ছাত্র অধিকার পরিষদের বিভিন্ন ইউনিটের প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক দিদারুল আলম ভূঁইয়া ও ছাত্র ফেডারেশন নেতা আরমানুল হক। এছাড়াও, সমাবেশে সংহতি জ্ঞাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সামিনা লুৎফা, ড. তানজিম উদ্দিন খান, ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান, সু্প্রিমকোর্টের আইনজীবী কাজী মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সারা হোসেন প্রমুখ।