৬২’র শিক্ষা আন্দোলনের ৬০তম বার্ষিকী আজ। ১৯৬২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না-জানা অনেকেই।
শনিবার দুপুরে ‘শ্রেণী বিভাজনের শিক্ষা নয়, মানুষ গড়ার শিক্ষা চাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে ৬০তম শিক্ষা দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ছাত্র সমাবেশ ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নীলখেত হয়ে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এসে র্যালী শেষ হয়।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মোঃ ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলের সঞ্চালণায় বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু।
সমাবেশে অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, যেই দাবিতে ৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলন হয়েছিল তা এখনও পূরণ হয় নাই। সেদিন যারা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারাই এখন সরকার পরিচালনা করছেন। তাদের কাছে প্রশ্ন রাখুন, আপনার কেনো শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করছেন। এখন আর কোন স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় নাই, সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে। এখানে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয় সরকারি দলের বিবেচনায়। শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এখান থেকে ফিরে আসার পথ কঠিন। গণ আন্দোলন ছাড়া মুক্তির পথ নাই।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মোঃ ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আমরা ছাত্র ইউনিয়ন ৬২র শিক্ষা আন্দোলনে যেমনভাবে লড়াই করেছিলাম একটা শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষানীতির জন্য, আজো লড়াই করে যাচ্ছি একই দাবিতে। সেদিনের সেই শহিদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথ আমাদেরকে এখনো পথ দেখায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর প্রশাসন চায় না ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক চর্চা হোক। দিনে দিনে এই সরকার শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তর করছে একইসাথে পাঠ্যপুস্তক থেকে প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দিয়ে শিক্ষাকে সাপ্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছে। আমরা শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ এবং শিক্ষা বানিজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যহত রেখেছি।
সমাবেশে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহ্বায়ক কাজী রাকিব, ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি শাহরিয়ার ইব্রাহিম মিমো, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি রেজোয়ান হক মুক্ত, গাজীপুর জেলা সংসদের সভাপতি দিদারুল ইসলাম শিশির, মানিকগঞ্জ জেলা সংসদের সভাপতি রাসেল আহম্মেদ।