সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। শুক্রবার (বিকেলে) রাজধানীর শাহবাগে গনতন্ত্র মঞ্চ কর্তৃক আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক সানাউর রহমান তালুকদার, গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাউয়ূমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরু বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য গনতন্ত্র মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, কোন দলকে ক্ষমতা থেকে নামানো কিংবা ক্ষমতায় আনার জন্য নয়। দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করব। হামলা মামলা দিয়ে জনগণের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকব।
তিনি বলেন, এই মূহুর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণতন্ত্র মঞ্চ উদ্যোগ নিয়ে এই সংবিধানকে নতুন করে বিনির্মাণ করবে। এই সংবিধান গত ৫০ বছরে ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। প্রতিটি সংশোধন ছিল শাসকদের সুবিধার জন্য।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা এই মঞ্চের সবাই ক্ষমতায় আসতে চাই। তবে একা নয় সবাইকে সাথে নিয়ে আসতে চাই। বর্তমানে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেলে সেই পরিবারটি আর মধ্যবিত্ত থাকে না। চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে গরিব হয়ে যায়। আমরা ক্ষমতায় গেলে সকল গরিব মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করব। আর আমাদের ক্ষমতায় আসতে হলে এই জালিম সরকারকে আগে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি জানিয়ে মান্না বলেন, আমি এই কথা বলছি না যে, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাই না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তো লাগবেই। কিন্তু এই সরকার চলে গেলে যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমতায় দিবে তা হবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তো হবেই সেই সাথে সেই এটি পরবর্তী নির্বাচনের ব্যবস্থাও করবে।
আ স ম আব্দুর রব বলেন, সরকারের কেউ কেউ বলছে লাঠি নিয়ে আসা যাবে না। লাঠিটা আনলো কে। আপনারা হেলমেট, স্ট্যাম্প, কুড়াল এগুলাকে তো দেখেন না। আমাদের দেশের কিছু মেয়ে সাফ ফুটবল থেকে উপমহাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান বয়ে এনেছে। আর ইডেনের মেয়েরা সেগুলেকে বর্জন করেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশকে বিক্রি করতে চাচ্ছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে এখন এক ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসন চলছে। এই সরকার নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে যে কোন কিছু করতেই পারে। তারা মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে কিন্তু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিজেরাই সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেয়। প্রীতম দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে তারা ওই এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে আন্দোলনকে দমাতে চায়। এ সরকারের ছত্রছায়ায় দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রামে গঞ্জে আজ চুরি, লুটপাট ও দুর্নীতির মহোৎসব চলছে বলেও তিনি দাবি করেন।
পরে গণতন্ত্র মঞ্চের আহবায়কের দায়িত্বে থাকা জোনায়েদ সাকি সংগঠনটির আগামীর কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের দেশের আট বিভাগীয় শহর ও প্রতিটি জেলা শহরে গণতন্ত্র মঞ্চ সমাবেশ করবে বলে তিনি জানান। আর ঢাকায় সংগঠনটি প্রতিটি থানায় থানায় সমাবেশ হবে, আমি ৭ই অক্টোবর কারওয়ান বাজারে সমাবেশের মধ্য দিয়ে সেটি শুরু হবে।