গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরীমণি বলেন,
ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরই হারুন স্যার ম্যাজিকের মতো কাজ করেছেন। এতোটা তাড়াতাড়ি ম্যাজিকের মতো পুলিশ আমাকে সহযোগিতা করবে সেটা আমি ভাবতে পারিনি।
পুলিশ এক্ষেত্রে যে কাজটা করেছি তার জন্য তাদেরকে অবশ্যই ধন্যবাদ।
অপরদিকে,আবু ত্ব-হার মোহাম্মদ আদনানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার বলেন একটি টকশোতে বলেন,
আমি মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছি। আমি আজকে ৩ দিন যাবৎ কিছুই করতে পারতেছিনা। উনার (আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের) মিসিংয়ের পর থেকে না আমি খেতে পারতেছি, না আমি ঘুমাতে পারতেছি, না আমি কিছু করতে পারতেছি।
আমি কোথায় যাবো…? কি করবো….? এটাই আমি বুঝতে পারতেছি না। কে আমাকে হেল্প করবে এটাও বুঝতে পারতেছি না। আমাকে হেল্প করার মত আমার চারপাশে কেহই নেই। একটি মেয়ে হিসেবে কি করা উচিত আমার… তা আমি বুঝতে পারতেছি না। এই কথা গুলো বলেছিলেন আরও দুদিন আগে।
এর মধ্যে আজকে(১৬/৬/২১) পাচঁ দিন পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজের নিষয়ে পুলিশের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অনেক প্রচেষ্টা আর ঘুরাঘুরির পর অবশেষে রংপুরে একটা জিডি করতে পেরেছেন।
একটা বিষয় বলে রাখি তা হলো আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ এখন।তারা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যে কাউকে সহজে খুজেঁ বের করতে পারে।তবে সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি চায়।এক্ষেত্রে বিরোধী দলের কারও প্রতি কিংবা সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকলে দেখা যায়।
পুলিশ কর্মকর্তারা কিছুদিন আগে বলেন, পিটিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের দিন শেষ। এখন সময় প্রযুক্তির।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, এন্ট্রি টেরোরিজম ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা অপরাধ তদন্তে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করছে। থানা পুলিশের অভিজ্ঞ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন।
সুতরাং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাইলে
আবু ত্ব-হা আদননানের ফোন ট্যাকিং এর মাধ্যমে চেষ্টা করলে অনেক কিছু সম্ভব হতো।কিন্তু আমরা দেখছি এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন আগ্রহ নেই।
অথচ আইনের চোখে সবাই সমান। রাষ্ট্রের সব নাগরিকই আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।
কেবল বিধিবদ্ধ আইনই নয়, আমাদের সংবিধানও নাগরিকের সে অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে।
আমাদের সংবিধান বলছে, আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার শুধু অধিকারই নয়, মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্ত।
মৌলিক অধিকার হচ্ছে এমন অধিকার যা রাষ্ট্র তার নাগরিকদের প্রদান করতে আইনত বাধ্য। অর্থাৎ রাষ্ট্র নাগরিকদের এসকল মৌলিক অধিকার বলবৎ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
কিন্তু বাস্তবে আমরা পুরাই ব্যতিক্রম দেখি।
পরীমণির ঘটনায় পুলিশের ম্যাজিক আর আবু ত্ব-হা আদননানের ক্ষেত্রে অনীহা রাষ্ট্রের অসংগতি কে আরও স্পষ্ট করে তুলে।
এমন পরিস্থিতিতে নাগরিক হিসেবে আমরা নিজেরাই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কেননা আগে এমন ঘটনা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ক্ষেত্রে ঘটলেও এখন এমন ঘটনা যে কারও সাথে ঘটছে।
আবু হানিফ
যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।