মোহাম্মদ দুলাল আল মাইজভান্ডারীঃ
আজ ২৬ মার্চ। বাংলাদেশের ৫৩ তম স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের ভোরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে গেলেও চূড়ান্ত জয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ডাক দেন। তারপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ঐ বছরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালায়। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গোলাবর্ষণ করা হয়, অনেক স্থানে নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং অনেক স্থানে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী ২৫ মার্চ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের সেনা অভিযানের সাংকেতিক নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’। সেদিন মধ্যরাতে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশলাইন, নীলক্ষেত এলাকায় নিরস্ত্র বাঙালির উপর আক্রমণ চালায় বর্বর হানাদার বাহিনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে জহুরুল হক হলের প্রায় ২০০ জন ছাত্র ও রোকেয়া হলের ৩০০ জন ছাত্রীকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী।
১৯৭১ সালে ২৭ মার্চের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে যা নয় মাস স্থায়ী হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে উদযাপন শুরু হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়। জাতীয় স্টেডিয়ামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়। এই দিনটিতে সরকারি ছুটি থাকে। পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে।
বাংলাদেশের ৫৩ তম স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীরমুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য আত্মদানকারী সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।