নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণঅধিকার পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত দুর্নীতি ও দুঃশাসন বিরোধী গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৯ মে) দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েরর সামনে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, প্রবাসী অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী অংশ নেন। এছাড়া সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও ছিল লক্ষ্যনীয়।
সমাবেশ থেকে গণতন্ত্র,আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গণআন্দোলনের ঘোষণা দেন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা। এ আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার আহবান জানান তারা।
গণসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুলহক নুর বলেন,” আমাদের চলমান আন্দোলন দেশ ও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে এই অবৈধ সরকার হঠানো জরুরী হয়ে পড়েছে। এই সরকার অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় থাকতে দেশকে বিদেশিদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।”
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ অবাধ,সুষ্ট নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কথা বলছে।আমরা এটাকে সাধুবাদ জানাই। সরকার চাইলেও আগের মত নির্বাচন করতে পারবে না। নির্বাচন করতে চাইলে নিকারাগুয়া,নাইজেরিয়ার মতো নিষেধাজ্ঞার মতো ঝামেলায় পড়বে। যা দেশকে ভেনিজুয়েলার মতো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে। সুতরাং দেশকে বাচাঁতে ,দেশের মানুষকে বাঁচাতে গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এভাবে আন্দোলন চললে আগামী ২/৩ মাসে সরকারের পতন হবে। আমরা এই অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে জীবন দিতে প্রস্তুত।
২০১৪ সালে বিনা ভোটের নির্বাচনের পর সরকার অগ্নিসংযোগ করে বিরোধীদের উপর দায় চাপিয়েছে বিদেশিদের কাছে বিরোধীদের সহিংস হিসবে তুলে ধরেছে। এবারও সেই পুরানো ষড়যন্ত্র করছে। তাই তারা হাত ভেঙে ফেলা,আগুনে পোড়ানোর কথা বলছে। বিরোধী দলসমূহের প্রতি আমার আহ্বান জনগণকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে রাজপথে নামুন। সেই আন্দোলন যেখানেই হোক ,যারা করুক সেটাই আমাদের আন্দোলন।
দেশের এই সংকটে বিচারক,সামরিক বাহিনী,পুলিশ প্রশাসনসহ সকল নাগরিককে ভাবতে হবে আমরা এই দেশে বাকশাল/ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় সমর্থন করবো নাকি গণতন্ত্র,আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গণআন্দোলনকে সমর্থন করবে।এদেশে বাকশাল/’ ফ্যাসিবাদ কায়েম হলে আগামী প্রজন্ম আমাদেরকে ক্ষমা করবে না।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, আমাদের ভোটচোরের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ভোটচোরদের গায়ে পুশ করতে হবে। আগামীতে শুধু ভোটই বর্জন করা হবেনা। দলীয় সরকারের অধীনে সমস্ত নির্বাচন বন্ধ করতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ১৪ ও ১৮ মার্কা নির্বাচন আর বাংলাদেশে হবেনা। এই নির্বাচন কমিশন যদি ভোটচোরের সহায়তা করে, তাহলে নাইজেরিয়ার ভোটচোরদের সহায়তাকারীদের মত বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের উপর মার্কিন স্যাংশন আসতে পারে। এই স্যাংশনেই মাথা এতো গরম, আরও স্যাংশন আসলে তো ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না। কূটনীতিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাতিল করে সরকার আমেরিকার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু আমেরিকা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র, আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, এজন্য আমরা তাদের সহযোগিতা চায়।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, বিপ্লব পোদ্দার, সোহরাব হাসান, আবু হানিফ, সাদ্দাম হোসেন, শাকিল উজ্জামান, নাজমুস সাকিব, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, জসিম উদ্দিন,পাঠান আজহার সহকারি আহ্বায়ক শেখ খায়রুল কবীর, নুরে এরশাদ সিদ্দিকী যুগ্ম সদস্যসচিব আতাউল্লাহ, আব্দুজ জাহের,তারেক রহমান, ফাতেমা তাসনিম, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণে আহ্বায়ক ড.মালেক ফরাজী সদস্যসচিব ঈসমাইল হোসেন বন্ধন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কর্ণেল(অবঃ) মিয়া মশিউজ্জামান।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সুহেল রানা সম্পদ, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ডা জাফর মাহমুদ প্রমুখ।
সমাবেশে এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী অধিকার পরিষদ যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মুখলেসুর রহমান শামীম নবদূতকে বলেন, দুর্নীতি ও দুঃশাসন এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে আমরা উপস্থিত হয়েছি। আমরা প্রবাসীরা দেশের উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখলেও, এয়ারপোর্টে, বিদেশি দূতাবাসেসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রবাসীদের লাশগুলো সরকারি খরচে দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয় না। আজকের এই সমাবেশ থেকে আমাদের এই দাবিগুলো আবারো তুলছি। এবার আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে হলেও মানতে বাধ্য করব।