রাশেদুল হক রিয়াদ
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করে, তাতে তথ্যপ্রযুক্তি অংশে আরও অনেক কিছুর সঙ্গে ছিল একটি বাক্য, ‘২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ।’ এই একটি বাক্যই বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার জন্য ছিল যথেষ্ট বলে মনে করেন দেশের আইটি খাত সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ওই বাক্যের মধ্যেই নির্ধারিত হয়ে যায় রূপকল্প। যে রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বিপিও সামিট বাংলাদেশ-২০১৬-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, বর্তমানে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতে ২৫ হাজার তরুণ কাজ করছে। ২০২১/২০২২ সালের মধ্যে এ খাতটিতে ২ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আর ওই সময়ে বিপিও খাত থেকে বাংলাদেশ এক বিলিয়ন ডলার আয় করবে। জয়ের নিজ উদ্যোগে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো বিপিও সামিট আয়োজন করা হয়। প্রথম সফল আয়োজনের ১০ মাসের মাথায় দেশে হয়ে গেল বিপিও সামিট। এজন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বলেই তিনি বিপিওতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেখেছেন। আয়োজকরা সদস্য সমাপ্ত বিপিও সামিটে জানিয়ে দিলেন, প্রথমবারের অয়োজনের পরে দেশে বিপিও খাতের আয় বেড়েছে। তারা উল্লেখ করেন, গত বছর বিপিও সামিটের আগে এ খাত থেকে বাংলাদেশের আয় ছিল ১৩০ মিলিয়ন ডলার। মাত্র ১০ মাসের মাথায় সেই আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলারে। আয়োজকরা এর পুরো কৃতিত্ব দিতে চান জনাব জয়কে।
বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে বাংলাদেশ ডিজিটাইজেশনের পথে অনেক দূর এগিয়ে যায়। দেশের সম্পাদিত অনেক কাজই এখন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হয় না। সচিবালয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ এমনকী গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্কুলেও পৌঁছে গেছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া।
সংশ্লিষ্ট খাত সম্পৃক্তরা বলেন, গত মেয়াদে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাথমিক (তাত্ত্বিক কাজ) কাজ সম্পন্ন করে। চলতি মেয়াদে পুরোপুরিভাবে ব্যবহারিক কাজ শুরু করেছে। তাদের আশা সজীব ওয়াজেদ জয় নেতৃত্বে থাকলে ২০২৩ সালের আগেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয় নিজের হাতে দেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার গতিশীল নেতৃত্ব, গাইডলাইন ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ছাড়া এতটা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। তথ্যপ্রযুক্তিতে যখন যা করা দরকার, ঠিক ওই সময়ে তিনি সেই কাজে হাত দিয়েছেন।
পলক বলেন, দেশে একটি নয় প্রায় ১২টি হাইটেক পার্ক হতে যাচ্ছে। হাইটেক পার্কগুলোতে কী থাকবে, কী হবে, কারা আসবে, সেসব নির্দেশনা তিনি দিচ্ছেন। দ্রুত গতিতে হাইটেক পার্কগুলো এগিয়ে চলেছে। তিনি আইটি পলিসি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। তার একান্ত উদ্যোগে এবং মতামতের ভিত্তিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। কাওরান বাজারের জনতা টাওয়ারকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক করা হয়েছে। সেখানে আইটি ইনকিউবেটর করা হচ্ছে নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জানান, এছাড়া দেশে বেশ কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক আন্তর্জাতিক মেলা, প্রদর্শনী (ই-এশিয়াসহ) হয়েছে। তাতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। ওইসব মেলা ও প্রদর্শনীতে বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা অংশ নেন। তিনি ছিলেন বলেই বিষয়গুলো সহজ হয়েছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আসলে এভাবে বলে শেষ করা যাবে না।
/এমএনএইচ/