সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার দাবি জানিয়েছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
চাকরি প্রত্যাশীরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে, সচিবালয়ে এ ব্যাপারে স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানান।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার দাবি জানিয়েছেন উদাহরণ স্বরূপ বলেন সুনামগঞ্জের ছাতক সিমেন্ট কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের মেয়ে কুলসুমা বেগম (৩০)। উপার্জনক্ষম আর কেউ না থাকায় টানাপড়েনের সংসার তাদের। অনেক কষ্টে এমএ পাস করার পর পরিবারের হাল ধরার স্বপ্ন দেখতেন কুলসুমা। এজন্য একে একে ৩০টি সরকারি চাকরির আবেদন করেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। পার হয়ে যাচ্ছিল চাকরির বয়সসীমা। উচ্চ শিক্ষিত হয়েও পরিবারের পাশে দাঁড়াতে না পেরে ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে গত ২৬ নভেম্বর সবার অজান্তে বাড়ির পাশের আমগাছের সঙ্গে ফাঁস নিয়ে আত্মাহুতি দেন দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নকে। শুধু এক কুলসুমা বেগম নন, চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে যাওয়ায় আত্মাহুতির পথ বেছে নিয়েছেন অসংখ্য চাকরিপ্রত্যাশী। তারপরও বদলায়নি দৃশ্যপট।
মহামারি করোনার ধাক্কায় ২০২০ সালে বড় কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি। এরই মধ্যে অনেকের চাকরির আবেদনের বয়স শেষ হয়ে গেছে। যদিও প্রজ্ঞাপন জারি করে সাময়িকভাবে বয়সের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছে সরকার, কিন্তু সে হারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসছে না। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী বহু মানুষ কর্মহীন ও চাকরিহীন হয়েছেন। একই সঙ্গে কমেছে চাকরির সার্কুলার ও আবেদনের হার। বাংলাদেশে ২০১৯ সালের এপ্রিলের তুলনায় ২০২০ সালের এপ্রিলে অনলাইনে চাকরির সার্কুলারের হার কমেছে ৮৭ শতাংশ। আর গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তরুণদের এক-তৃতীয়াংশ চাকরি জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।