আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের একজন শিক্ষার্থী। দুইদিন আগে আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার একটি ঘোষণা আসে যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আমাদের পরীক্ষা শুরু। এই ঘোষণা অনেকের কাছে ভাল মনে হতে পারে কারণ গত ১৮ মাস আমাদের স্কুল কলেজ পরীক্ষা প্রায় সবকিছুই বন্ধ ছিল কিন্তু আমরা ছাত্র হিসেবে এই সিদ্ধান্তে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়েছি। কারণ আমরা জানি করোনার কারণে আমাদের স্কুল কলেজ সবকিছু বন্ধ ছিলো আর এখনও করোনার খুব যে ভালো সময় যাচ্ছে তাও না আর আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থী এখনো টিকা পাই নাই। তাহলে এরকম গণহারে আমাদের পরীক্ষা নেওয়া কি যুক্তিযুক্ত ? পরীক্ষার ১৩ থেকে ১৪ দিন আগে ঘোষণা আসে যে সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু ।এই সময়ের মধ্যে যেহেতু হল খুলছে না সেজন্য মেস ঠিক করা মেসে ওঠা ,পরীক্ষার প্রিপারেশন সবকিছু নিয়ে পরীক্ষা আসলে আমরা কিভাবে দিব এটা নিয়েও প্রচুর বিভ্রান্ত। আমরা সাত কলেজের শিক্ষার্থী এখনো টিকা পাইনি। টিকা ছাড়া এভাবে গণহারে পরীক্ষা নিয়ে আমাদের জীবনের ঝুঁকি থাকছে কিনা এটাও কি আমাদের প্রশাসন ভেবে দেখছে ? নাকি তারা আমাদেরকে ট্রায়াল হিসেবে নিচ্ছে যে আমাদের পরীক্ষার পরে আমরা আসলেই করোনা আক্রান্ত হই কিনা, গণহারে মারা যাই কি না এটার উপর কেন্দ্র করে বাকি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নিবে কিনা সেটার উপর সিদ্ধান্ত নিবে ।তাহলে আমাদেরকে যদি ট্রায়াল হিসেবেই ব্যবহার করা হয় তবে ১৮ মাস অপেক্ষা না করে, করোনার প্রথম ঢেউ এর পর আমাদেরকে ট্রায়াল হিসেবে ব্যবহার করলে এতো সময় নষ্ট হতো না। আবার গত দুই দিন থেকেই শুরু হয়েছে ১৮ বছরের বেশি সকলকে টিকা দেওয়া তাহলে এখন আমরা যদি আমাদের নিজ এলাকায় টিকার রেজিস্টেশন করি এবং প্রথম ডোজ নেই এবং ২য় ডোজ নিতে অন্তত এক মাস সময় লাগবে অর্থাৎ আমরা যখন ঢাকাতে যাব তখন আমাদের দ্বিতীয় ২য় ডোজের তারিখ আসবে তাহলে তখন আমরা কিভাবে দ্বিতীয় ডোজ নিবো এ নিয়েও আমার মনে রয়েছে সংশয়।
আর ট্রায়াল হিসাবে যদি আমাদের পরিক্ষা নেওয়া হয় তাহলে করোনার প্রথম ধাপের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব কিছু খুলে দিলে তখন পরিক্ষা নেওয়া হয় নাই কি কারনে!
এতেই বুঝা যায় বর্তমানে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার দাবিতে আন্দোলনের একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে সেই আন্দোলনকে থামানোর জন্য হয়তো পরিকল্পিত ভাবে ৭ কলেজ কে দিয়ে এই পরিক্ষার ঘোষণা দিয়েছে।
আফ্রিদী হাসান
ঢাকা কলেজ
অর্থনীতি বিভাগ।