(রাশেদুল হক রিয়াদ) ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নবদূত:-
উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ১২৯তম জন্মদিন আজ বুধবার। ১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
তাঁর পিতা স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করার পর মায়ের নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষা এবং সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সোহরাওয়ার্দী। ১৯১৩ অনেকটা পারিবারিক ঐতিহ্য মেনেই তিনি আইন পড়তে যান ইংল্যাণ্ডে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন এবং আইনজীবী হিসাবে কিছুদিন কাজও করেন ব্রিটেনে।
মি: সোহরাওয়ার্দী ১৯২০ সালে ভারতে ফিরে আসেন এবং পরের বছর বাংলা প্রাদেশিক সভায় সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯২৪ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু। এ বছরেই কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালে স্বরাজ পার্টি থেকে পদত্যাগ করে ১৯৩৬ সালের শুরুর দিকে তিনি ইনডিপেনডেন্ট মুসলিম পার্টি গঠন করেন। সাংবিধানিক শাসনে বিশ্বাসী ও বাস্তববাদী এ রাজনীতিবিদ ১৯২৪ সালে কলকাতা সিটি কর্পোরেশনের ডিপুটি মেয়র, ১৯৩৭ সালে ফজলুল হক কোয়ালিশন মন্ত্রিসভার শ্রম ও বাণিজ্যমন্ত্রী, ১৯৪৩-৪৫ সালে খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রিসভায় বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী, ১৯৪৬-৪৭ সালে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তান আমলে ১৯৫৪-৫৫ সালে মোহাম্মদ আলীর মন্ত্রিসভার আইনমন্ত্রী এবং ১৯৫৬-৫৭ সালে ১৩ মাস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নেও সোহরাওয়ার্দী তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
পরে গণতন্ত্রকামী বিভিন্ন দলের সমন্বয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র সাত বছরের মধ্যে পাকিস্তানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠন করে তিনি ১৯৬২-৬৩ সালে আইয়ুববিরোধী সম্মিলিত জোটের আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ৭১ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
জনগণের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও গণতন্ত্রের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাই ছিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবনের প্রধান রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য। দেশভাগের আগে ভারত ও পাকিস্তানের পাশাপাশি অখণ্ড স্বাধীন বাংলা নামে একটি ‘ডমিনিয়ন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। তার জন্মদিন উপলক্ষে আজ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।