নবদূত রিপোর্ট:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট)’র তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিচারের মাধ্যমে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ ও চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে আবরার ফাহাদকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৩ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ ও চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব ও সংগঠনটির ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, আবরার ফাহাদ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলো। আর সেই স্ট্যাটাস গায়ে লেগেছিলো এই দেশের ভারতীয় স্বার্থের বশংবদ আওয়ামী লীগ ও তার প্রতিপালিত গুন্ডাবাহিনীর কাছে। গুন্ডাবাহিনীর সহ্য হয় নি তাকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়েছে। আবরার ফাহাদ এ দেশের স্বাধীনতার প্রতীক বলে উল্লেখ করেন লতিফ মাসুম।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেসময় বলেছিলো এটি একটি নিয়ম রক্ষার নিবাচন। এবং ২০১৮ সালে বলেছিলেন আপনারা আমাকে বিশ্বাস করুন। আপনি (শেখ হাসিনা) একথাটার মূল্য বুঝেন! আর তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করলেনন। আওয়ামী লীগের একদিনও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, বুয়েটে যারা ছাত্রলীগ করছে তারা সবাই আবরারের খুনীদের মতো দুর্বৃত্ত এটা কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি সেটা সত্যও নয়। অনেকেই হয়তো এই দুর্বৃত্তায়নের চরিত্র ধারণ করতে পারে। আমিও ছাত্রলীগ করেছি তবে দুর্বৃত্তায়নের সাথে নিজেকে জড়াইনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সকলে নিয়োগে ভাগ ভাটোয়ারা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি ও আবরার ফাহাদ হত্যাকরীদের দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান আহবান জানান নুর।
অডিও কলে যুক্ত হয়ে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন , ‘আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল দেশের সেবা করবে। লেখা পড়া শেষ করে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে আবার দেশে ফিরে আসবে।’
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বরকত উল্লাহ আরো বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করা হোক। দোষীদের ফাঁসি চাই।’ তিনি জানান, আবরার ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। বুয়েট ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলজে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল সে।
আবরার দেশপ্রেমিক ছিলেন। দেশকে ভালোবাসতেন বলে সে জীবন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।