বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম স্থপতি, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম রুপকথার মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসনির ১৪০ তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে আজ। বিকেলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেজর হায়দার মিলনায়তনে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে চার সংগঠন এই জন্মবার্ষিকী পালন করে। ভাসানী অনুসারী পরিষদ,গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র,যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও রাষ্ট্রচিন্তা যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ভাসানীকে আজ পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে দেশের সব জায়গা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে। স্বৈরাচারী সরকার তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ভাসনীর ইতিহাসকে মুছে দিতে চায়। কিন্তু মানুষের অধিকার আদায়, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ভাসানীর আদর্শ আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজপথের আন্দোলনে অগ্রগামী ভুমিকা পালন করবে। অনুষ্ঠানে বক্তরা ভাসানীর মত বর্তমান বাংলাদেশের সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে এই চার সংগঠন একসাথে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল বলেন, ভাসানী বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা। তিনি আওয়ামী মুসলীগ লীগের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্তরের সবগুলো জায়গায় ভাসানী অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু এক নেতাকে মহান করতে গিয়ে ভাসানীকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দুই নায়কের একজন ভাসানী। যিনি শেখ মুজিবেরও জীবন বাঁচিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকার হওয়ায় ভাসানীর ইতিহাস মুছে ফেলছেন।
মাওলানা ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করে। উপমহাদেশের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দে পড়াশোনা করে মজলুম কৃষকের অধিকার আদায়ে এবং জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করেন তিনি। খেলাফত আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন,বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর ৯৬ বছর বয়সে ভারতের বিরুদ্ধে ফারাক্কা অভিমূখী লংমার্চের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ইতিহাসে অন্যতম জায়গা করে নিয়েছেন। ক্ষমতার সাথে আপোষ না করে আজীবন সংগ্রামের পথ বেছে নেয়ার কারণে তাঁকে “মজলুম জননেতা” হিসাবে অভিহিত করা হয়। আসামের ভাসনচরের কৃষকের অধিকারের জন্য আন্দোলন করার কারণে তাকে ” ভাসানী ” উপাধি দেয়া হয়।