দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম একটি খাতের নাম রেমিটেন্স। রেমিটেন্স অর্থনৈতিক গতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিয়াস হিসেবে কাজ করে।
এই রেমিটেন্স আমাদের মোট অভ্যন্তরীণ আয় বা জিডিপির ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ। দেশকে উন্নত দেশে উত্তরণের অভিযাত্রায় এগিয়ে রাখতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন রেমিটেন্স প্রেরক প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
দেশের অর্থনীতিতে অক্সিজেনের মতো ভূমিকা রাখছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয়নের অন্যতম নিয়ামক এই রেমিটেন্স।
বিমানবন্দরসহ প্রতিটি স্তরে চরম অবহেলার শিকার হন প্রবাসীরা, রেমিট্যান্স যুদ্ধাদের এয়ারপোর্টে হয়রানি বন্ধ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্সের টিকেটের মূল্য বৃদ্ধির অতিরিক্ত ভাড়া প্রত্যাহার, দালাল মুক্ত পাসপোর্ট সেবার দাবীতে আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ।
এই সময় বক্তারা বলেন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের যে পরিমাণ ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে তা থেকে তিন, চার গুণ বেশি ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। তাতে করে মধ্যপ্রাচ্যগামী বহু প্রবাসী শ্রমিক এখন তার নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বক্তারা আরো উল্লেখ্য করেন আমরা যাদেরকে রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে উপাধি দিচ্ছি প্রতিনিয়ত এই রেমিটেন্স যোদ্ধারা বাংলাদেশের বিমানবন্দর গুলোতে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন তাছাড়া বিভিন্ন দূতাবাসগুলোতে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য বা নতুন পাসপোর্ট তৈরি করার প্রক্রিয়ায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন।
এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা, গনঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার করিব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সলিসিটর বিপ্লব কুমার পোদ্দার, কেন্দ্রীয় নেতা ফয়েজ উল্লাহ, বাংলাদেশ ছাএ, যুব, শ্রমিক ও গনঅধিকার পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এই সময় বক্তারা আরো বলেন, সুন্দর জীবনের খোঁজে যাওয়া এই প্রবাসীরা কি আসলেই সুন্দর জীবনের দেখা পায়? যখনই দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধির কথা আসে, তখন সবাই একবাক্যে স্বীকার করে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা; তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের কথা। কিন্তু কেমন কাটে প্রবাসীদের জীবন- তার খবর রাখে ক’জন? সরকার কী সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তাদের কিংবা সমাজ তাদের কোন চোখে দেখে- এসব প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ফয়েজ উল্লাহ বলেন পরিবার-পরিজন ছেড়ে দূর-প্রবাসে রেমিটেন্স যোদ্ধারা দেশের অর্থনীতিতে এমন ভূমিকা রাখলেও এই প্রবাসীরা এয়ারপোর্টে ভোগান্তি, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ইস্যুসহ বিভিন্ন কাজে হয়রানির শিকার হন, এমনকি একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসে মারা যাওয়ার পর তার মরদেহটি দেশে পাঠাতে গুণতে হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ।
মানববন্ধন কর্মসুচী থেকে উল্লেখ দাবী গুলো মেনে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের নিকট আহবান জানান বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।