নবদূত রিপোর্ট:
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক নেতাকর্মী রয়েছে, এই নেতাকর্মীরা যদি রক্ত দান করে এবং ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক কাজে তাহলেই দেশের সকল রক্তের প্রয়োজন মেটানো যাবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা সংলগ্ন বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। সকাল ১১টায় রক্তদান কর্মসূচি শুরু হয়ে সারাদিন এই কর্মসূচি চলে।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চক্ষুবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. এম এ আজিজ সহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ডা. দিপু মনি বলেন, যখন ছাত্রলীগ করার বয়স হয়েছিল তখন ছাত্রলীগ ছাড়া আর কিছুই করার কথা কখনো ভাবিনি। এখানে একটা ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক তৈরি হয়েছে এবং এটা যদি কাজ করে তাহলে আমাদের ব্লাডের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা সম্ভব। আগে মানুষ রক্ত দিতে চাইতো না কিন্তু এখন নিজেদের আপনজনকে বাঁচানোর জন্য হলেও মানুষ রক্ত দিতে এগিয়ে আসছে। এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে একটি মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচানো সম্ভব অথচ এই রক্তটাই তিন মাস পর নষ্ট হয়ে যায়। এই ক্যাম্পাসে সর্বাধিকবার এসেছি রক্ত নিতে। ছাত্রলীগকে তৈরি করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য। আর তার স্বপ্নই ছিল এই দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে তৈরি করা।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের নামে নানা অপবাদ দেয়া হয় যেসব আগাছা, পরগাছার কারণে তাদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এসময় তিনি ভার্চুয়াল ব্লাড ব্যাংক উদ্বোধনে জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি মরনোত্তর কর্নিয়া দান কর্মসূচি গ্রহণে আহ্বান জানান।
সরকারি আলিয়া মাদ্রাসায় আন্দোলন বিষয়ে তিনি বলেন, বকশীবাজারে মাদ্রাসা অধিদফতর ভবন নির্মাণ হচ্ছে তার পাশে আলিয়া মাদ্রাসা হোস্টেল আছে। হোস্টেল আমি গিয়ে দেখে এসেছি, তা নতুন করে আবার নির্মাণ করতে হবে। এখন যে অবস্থায় আছে তা খুব বাজে অবস্থায় আছে। সেখানে বাগান হবে, খেলার মাঠ হবে, পুরো জায়গাটি অনেক বেশি সুন্দর হবে। সেখানকার শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা অধিদফতরের ভবন নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছে, এটি মোটেও ঠিক নয়। এখানে অধিদফতরের ভবন নির্মাণ হবে সে প্রকল্প পাশ হয়েছে গিয়েছে। সরকারের যেই সিদ্ধান্ত, সেই সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া উচিত নয়। তাদের ছাত্রাবাস নিয়ে যদি কোনো কথা থাকে যেকোনো সময় তারা আমার সাথে কথা বলতে পারে। আমার দরজা সবসময় খোলা, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য। আলোচনার পথ কখনো বন্ধ নয়,সবচেয়ে ভালো সমাধান টা খুঁজে বের করতে চাই। কিন্তু তার জন্য সকল পক্ষের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ইচ্ছে থাকতে হবে।
কুয়েটে শিক্ষক মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সকল বিবেচনায় নিয়ে আইনের কাঠামোয় রেখে সুষ্ঠু সুরাহা করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা হয়েছে, আমারা সমাধান করার চেষ্টা করেছি। আমরা ইতোপূর্বে অনেক সমস্যার সমাধান করেছি, খুব ভালো সমাধান করেছি। এটারও খুব ভালো একটা সমাধান আমরা করতে পারবো বলে আশা করি।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিল তখন তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আত্মমানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা। আমাদের কোন কাজকর্মে যেন আমাদের প্রিয় অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কষ্ট পেতে না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আছে বলেই দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে উদ্বুদ্ধ। ছাত্রলীগ আছে বলেই এখন আর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাআাজি টেন্ডারবাজি হয় না। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষে শিক্ষার্থী মারা যায় না,ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকে না।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।