নবদূত রিপোর্টঃ
অমর একুশে বইমেলা ২০২২-এর পর্দা নামল আজ (বৃহস্পতিবার)। করোনা পরিস্থিতিতে দেরিতে শুরু হওয়া এবারের মেলায় প্রকাশক-বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিক্রির পরিমাণও গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। আর এতে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন লেখক-প্রকাশকরা।
মেলার শেষদিন বিকেলে সরেজমিনে মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রবেশপথ থেকে শুরু করে ভেতর পর্যন্ত মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অনেকে বই কিনতে এসেছেন। আবার এসেছেন শেষদিন উপলক্ষে। বইপ্রেমীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে তালিকা ধরে কিনছেন প্রিয় লেখকদের বই। দম ফেলার ফুরসত নেই বিক্রয়কর্মীদের। কর্মীরা স্টলে বই গুছিয়ে নিচ্ছেন।
প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু হওয়ার রীতি থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার দুই সপ্তাহ দেরিতে শুরু হয় অমর একুশে বইমেলা। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এবারের বইমেলা প্রথমে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও পরে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সময় বাড়ানোয় বিক্রিও হয়েছে বেশি।
মেলায় কথা হয় গাংচিল প্রকাশনের স্বত্ত্বাধিকারী খান আক্তার হোসেনের সঙ্গে। এবার বিক্রি কেমন ছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এক লাখ চার হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বইসহ উপন্যাস বেশি বিক্রি হয়েছে।
স্টুডেন্ট ওয়েজ প্রকাশনীর স্টলকর্মী সাদিয়া আফরিন জ্যোতি বলেন, আজ একটু খারাপ লাগছে, আরও সময় বাড়ালে ভালো লাগতো। বই বিক্রির সুবাদে অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। শেষদিন হিসেবে ব্যস্ততা একটু বেড়েছে।
শ্রাবণ প্রকাশনী স্টল কর্মী রিমিয়া রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা বইগুলো বেশি বিক্রি হয়েছে। বইমেলায় কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি, এখানে সবাই আন্তরিক।
বইমেলায় আসা ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, আজ শেষদিন উপলক্ষে পরিবার নিয়ে বইমেলায় এসেছি। হুমায়ুন আহমেদের বই কিনেছি সন্তানের জন্যে। এর আগেও এসেছি তবে আজকে খারাপ লাগছে শেষদিন হিসেবে।
আরেক ক্রেতা আবদুল্লাহ সালমান বলেন, সারা মাসে পত্রপত্রিকা ও বিভিন্ন প্রকাশনীর বুকলিস্ট দেখে পছন্দের বইগুলোর তালিকা তৈরি করে আজ কিনতে এসেছি। প্রতিবছর এভাবে পছন্দের বইয়ের তালিকা তৈরি করে বইমেলার শেষদিকে বই কিনি।
বইমেলার সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমি পরিচালক জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলা একাডেমির বই বেশি বিক্রি হয়েছে। এবারের মেলায় একাডেমি এক কোটি ৩৫ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। পুরো মেলায় বই বিক্রি হয়েছে ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকার।
তিনি আরও বলেন, গত বছর মেলায় প্রকাশকদের হিসাব অনুযায়ী বই বিক্রি হয়েছিল ৩ কোটি টাকার মতো। গতবারের তুলনায় বই বেশি বিক্রি হয়েছে, তবে ২০২০ সালের তুলনায় কম বিক্রি হয়েছে।
এবারের মেলায় তিন হাজার ৪১৬টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা একাডেমি পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী এবারের মেলায় মানসম্মত বই প্রকাশিত হয়েছে ৯০৯টি।