Saturday, September 21, 2024
Homeশিক্ষাসুযোগ পেয়েও মেডিকেলে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা শাবনুরের

সুযোগ পেয়েও মেডিকেলে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তা শাবনুরের

নবদূত রিপোর্টঃ

পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার দক্ষিণ কামারকাঠী গ্রামের দিনমজুর বাবুল মোল্লার মেয়ে শাবনূর এ বছর জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার এ সাফল্যে এলাকাবাসীসহ পরিবারের সবাই খুশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোট্ট টিনের ঘরে তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করেন বাবুল মোল্লা। বাবুল মোল্লা বলেন, আমার এক ছেলে, দুই মেয়ে। আমি একজন দিনমজুর। অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারি না। স্ত্রী সাবিনা বেগম গৃহীনি। আমার একার আয়ে পরিবারের ভরণপোষণ মেটাতে কষ্ট হয়। তার ওপর তিন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে খুব কষ্ট হয়। অসুস্থতার কারণে আগের মতো কাজ করতে পারি না।

শিক্ষার্থী শাবনূর বলেন, ‘আবার বাবা একজন দিনমজুর। অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চলে। আমি প্রাথমিক শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আসতে শিক্ষক-সহপাঠীদের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা পেয়েছি। সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ আলম আমাকে বিনামূল্যে কলেজে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেটের টাকা নিতেন না। মেডিকেল কলেজে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে এখন ভর্তির জন্য অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছি। মা-বাবা এ নিয়ে মন খারাপ করে আছে। আমি যদি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারি ডাক্তার হয়ে আমার বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করব।’

স্থানীয় দক্ষিণ কামারকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শাবনূরের বাবা একজন দিনমজুর। ওরা ৩ ভাইবোন পড়াশুনা করে। যেখানে ওদের প্রতিদিন ঠিকমতো খাবার জোটে না, সেখানে মেডিকেলে পড়ার খরচ শাবনূরের বাবার পক্ষে বহন করা প্রায় অসম্ভব। মেয়েকে চিকিৎসা শাস্ত্রে লেখাপড়া করানোর খরচ যোগানোর সামর্থ্য নেই বাবুল মোল্লার। তিনি অ্যাজমা আক্রান্ত হয়েও সংসারের খরচ যোগাতে দিনমজুরের কাজ করে কোনোভাবে বেঁচে আছেন।’

শাবনূরের প্রতিবেশীরা বলেন, শাবনূর ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। শিক্ষকরা তাঁকে নিয়ে গর্ব করতেন।

কামারকাঠি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং স্বরূপকাঠী শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে শাবনুর। জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষায়ও বৃত্তিসহ জিপিএ- ৫ পেয়েছিল।

এদিকে নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন সোমবার দুপুরে শাবনূরের বাড়ি গিয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ইউএনও মোশারফ হোসেন শাবনূরের মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য যাবতীয় খরচ নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলা পরিষদ থেকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular