জেলা প্রতিনিধি, যশোর :
সরকারি কাজ, সরকারি স্কুল মাঠে হচ্ছে, অনুমতির কি আছে! এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা সড়কের পিচ ঢালাই কাজে নিয়োজিত কয়েকজনের। ইকরা টিভির সরেজমিন ভিডিও চিত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যা ইতিমধ্যে ভাইরালও হয়েছে। স্কুল মাঠে পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে, কিন্তু স্কুল সভাপতি বা উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমতি নেই। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের জয়খোলা গ্রামে অবস্থিত একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের জয়খোলা শেখ আ: ওহাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন থেকে ১০ হাত দূরে পিচ গলানো এবং তার সাথে পাথর মেশানোর কাজ চলছে। পিচ পোড়া গন্ধে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই কয়েকদিন চলেছে পাঠদান। পরে শ্রেণি কারযক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়লে নিরুপায় হয়ে স্কুল বন্ধ রেখেছেন প্রধান শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধানশিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের পাওয়া গেল স্কুলের পেছনে একটি বাগানে। স্কুলে ঝুলছে তালা, তাই নিরুপায় হয়ে কখনো সভাপতির বাসায় কখনো গাছ তলায় সময় কাটাচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উড়ছে ধুলাবালি ও কালো ধোয়া। যা নাক দিয়ে প্রবেশ করছে ফুসফুসে। স্বাস্থ্য ঝুকিতে আছে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে আসা শিশু শিক্ষার্থীরা। তবে সড়ক কন্টাকটর, ম্যানেজার বা সংশ্লিষ্ট কেউই এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
২৮ মার্চ ২০২২ সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের মধ্যেই চলছে নড়াইল টু নওয়াপাড়া সড়কের পিচ পোড়ানোর কাজ। এই বিদ্যালয়ের মাঠে চলছে কর্মযজ্ঞ। জ্বলছে পিচের চুলা। বিভিন্নপ্রকার যন্ত্রপাতি, যানবাহন চলছে। উড়ছে ধোঁয়া, ধুলোবালি শ্বাস নিতেই তা পৌঁছে যাচ্ছে ফুসফুসে। দেখার কেউ নেই বলে অভিযোগ করলেন একজন অভিভাবক। তিনি আরো জানালেন, সব বাচ্চা বিদ্যালয়ে আসলেও আমার বাচ্চা আগামীকাল থেকে আসবে না।
প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত চম্পাকলি ম্যাম জানালেন, আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি, সেখান থেকে কোনো প্রকার অনুমতি বা নির্দেশনা আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। তবে এই অবস্থায় শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভবপর নয়। তাতে আমরা এবং শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়বে।
স্থানীয় জনসাধারণ জানান, পিচ তৈরির কাজ স্কুল মাঠে করায় আশেপাশের কোনো বাড়িতে টেকা যাচ্ছে না ধোয়া আর বিষাক্ত গন্ধে। পুকুরের মাছ মরে যাচ্ছে।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুকুমার মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানালেন, স্কুল বন্ধের সময় তারা (নির্মান কর্তৃপক্ষ) আমাদের অগোচরে পাথর ঢেলে রাখে মাঠে। পরে আমাদের বলেছিল মাঠের দক্ষিণপাশ ব্যবহার করবে। সেক্ষেত্রে আমাদের স্কুলে কিছু আর্থিক সহায়তা দেবেন। তবে এখন যে অবস্থা তাতে নির্মান কাজ চলতে দেয়া যায় না।
এ ব্যপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিমের সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।