নবদূত রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল বেরিবাধ এলাকায় অবস্থিত লিলি ক্যামিকেল কারখানায় অগ্নিকান্ডে দগ্ধ ৯ জনের মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন। এ ঘটনায় কারখানার মালিকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (০৩ মে) সকালে আজিজার রহমান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তবে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্লেখ, গত ২৯ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা।
রূপগঞ্জে লিলি কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ আরও দুজন মারা গেছেন। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে চারজন।
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জন মারা যান।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন ৩০ বছর বয়সী বায়েজিদ ও সজিব।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইউব হোসেন বলেন, ‘ রূপগঞ্জ এলাকা থেকে কেমিক্যাল কারখানায় আগুনে দগ্ধ হয়ে এখানে ভর্তি ছিলেন, বায়েজিদ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ও সজীব সন্ধ্যা ৭টায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বায়েজিদের শরীরের ৮৫ শতাংশ ও সজীবের শরীরের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ওই ঘটনায় আমাদের এখানে এখনও পাঁচজন চিকিৎসাধীন।’
এর আগে শুক্রবার দুপুরে দগ্ধ আকালু আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা হলেন, লিলি ক্যামিকেল কারখানার মালিক একেএম সেলিম, ম্যানেজার আব্দুল বাতেন, ইলেকট্রিশিয়ান রফিকুল ইসলাম, কাস্টম সাবরুল ইসলাম, সুপার ভাইজার কাউসার হাবিব।
বাদী আজিজার রহমান মামলায় উল্লেখ করেন, তার বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার ফুল চৌকি খামারপাড়া গ্রামে। আজিজার রহমানের ভাই আকালু লিলি ক্যামিকেল কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত ২৯ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে কারখানার পেষ্টিং সলিউশন (জুতা তৈরির আঠা) মেশিনের সুইচ চাপ দেন এক শ্রমিক। এসময় বিকট শব্দ হয়ে মেশিনে আগুন ধরে যত্রতত্র দাহ্য পদার্থ জাতীয় ক্যামিকেল মজুদ থাকায় খুব দ্রুত কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় তার ভাই আকালু, শ্রমিক সজিব, বায়েজীদ, রাসেল, মুজাহিদ, খাদেমুল, রোকন, মেহেদী ও রিপন কর্মরত থাকা অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়। অগ্নিদগ্ধদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামলার বাদী আজিজার রহমানের ভাই আকালু ও অপর শ্রমিক মুজাহিদ মারা যান। অন্যান্যদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, লিলি ক্যামিকেল কারখানার মালিক একেএম সেলিমসহ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারনে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।