Friday, November 15, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনচুয়ান্নে তিতুমীর কলেজ

চুয়ান্নে তিতুমীর কলেজ

ক্যাম্পাস ডেস্কঃ

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ সংখ্যক শিক্ষার্থীর বিদ্যাপিঠ সরকারি তিতুমীর কলেজ। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত এই কলেজ টি প্রতিষ্ঠার তিপ্পান্ন বছর পেরিয়ে পা দিয়েছে চুয়ান্নে। ইতিহাস, গৌরব ও ঐতিহ্যের সাথে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে সাহায্য করে যাচ্ছে কলেজ টি।

সরকারি তিতুমীর কলেজ ১৯৬৮ সনের ৭ই মে প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকলেও ২০১৭ সাল থেকে রাজধানীর বড় সরকারি সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে নেওয়ার সুবাদে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি লাভ করে। বর্তমানে এখানে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সার্টিফিকেট সহ বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করছে।

তিতুমীর কলেজ প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ

১৯৬২ সালের কথা । ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মাঝামাঝি সময়। বিভিন্ন দাবি আদায়ে প্রায়ই গর্জে উঠছে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ। হামিদুর রহমানের শিক্ষা কমিশন ছিলো ছাত্র সমাজের এই প্রতিবাদী ভাষা রোধ করতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক নীতির প্রতিফলন। তাই তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে যায় এদেশের ছাত্রসমাজ। গর্জে উঠে পূর্ব পাকিস্তান। ছাত্র আন্দোলনে ভীত হয়ে তখনই ছাত্রদের বিভক্ত করতে পরিকল্পনা করে পাকিস্তান সরকার। তারই ধারাবাহিকতা ১৯৬৮ সালে ৭ মে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রী শাখাকে আলাদা করে নিয়ে আসা হয় মহাখালীর ডিআইটি খাদ্য গুদামে। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর নামে নাম দেয়া হয় জিন্নাহ কলেজ।

জিন্নাহ কলেজ থেকে তিতুমীর কলেজ যেভাবেঃ

শুরুতে জিন্নাহ কলেজ নামে শুরু করলেও ১৯৭১ এর উত্তাল মার্চের শুরুতেই এদেশের ছাত্রসমাজ মুছে ফেলে স্বৈরাচারী পাকিস্তানের স্মৃতি।
১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান রেডিও-টেলিভিশনে এক ভাষণে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি স্থগিত ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের ছাত্রদের ন্যায়ে ফুঁসে উঠে জিন্নাহ কলেজের ছাত্ররাও। জিন্নাহ কলেজ শাখার ছাত্র সংসদের প্রথম সহ-সভাপতি (ভিপি) সিরাজউদ্দৌলার নেতৃত্বে টিপু মুনশি ও শাহাবুদ্দিনসহ তৎকালীন কতিপয় ছাত্রনেতা প্রতিক্রিয়া হিসেবে জিন্নাহ্ কলেজের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেন। তখন আনিসুজ্জামান খোকন (জিন্নাহ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক) জিন্নাহ কলেজের নাম ‘তিতুমীর কলেজ’ প্রস্তাব করেন।

২রা মার্চ ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় জড়ো হলে সেখানে তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আবদুর রবের মধ্যস্থতায় জিন্নাহ্ কলেজের নাম ‘তিতুমীর কলেজ’ হিসেবে চূড়ান্ত হয়। ওই রাতেই ‘তিতুমীর কলেজ’ নামকরণের সাইনবোর্ড লেখা হয় এবং দেয়ালে টাঙিয়ে দেয়া হয়।

কলেজের বর্ণনাঃ
বর্তমানে কলেজটিতে রয়েছে ০৬ টি একাডেমিক ভবন, দুটি প্রশাসনিক ভবন, একটি মিলনায়তন, লাইব্রেরি, মসজিদ, মন্দির, ছাত্র সংসদ কক্ষ, নিজস্ব জিমনেসিয়াম, মেয়েদের কমনরুম, শিশু দিবা যত্ন কেন্দ্র, ৫ টি আবাসিক হল (দুটি সদ্য উদ্বোধিত) ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ৫টি বাস। সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বর্তমানে কলেজটিতে রয়েছে অনুমোদিত ও অনুমোদিত ২০টির উপরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

RELATED ARTICLES

Most Popular