জেলা প্রতিনিধি, যশোর :
যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্যের চাহিদা বাড়লেও বাড়ছেনা বন্দরের অবকাঠামো। এতে পণ্যগারে জায়গা সংকটে কমেছে আমদানি বাণিজ্য। শিল্পকলকারখানার আমদানি পণ্য নামাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে আবার কখনও কাঁদা,পানির মধ্যে। পণ্যজটে যানজট সৃষ্টিতে সড়কে ভোগান্তি বেড়ে চলেছে মানুষের।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বানিজ্যে সবচেঁয়ে বেশি আগ্রহ ব্যবসায়ীদের। তবে বানিজ্যের চাহিদা বাড়লেও প্রয়োজনীয় অবকাঁঠামো বাড়েনি বন্দরটিতে। দূর্ভোগ আর হয়রানির মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর ধরে বাণিজ্য সম্পাদন করতে হয়। বর্তমানে বন্দরটিতে পণ্য রয়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন। পদ্মা সেতু চালু হলে বাণিজ্যের চাহিদা বাড়বে আরো দ্বিগুন। কিন্তু বন্দরের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। জায়গার অভাবে দিনের পর দিন ট্রাক ও রেল দাড়িয়ে থেকে অবশেষে পণ্য নামাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে আবার কখনো কাদা,পানির মধ্যে।বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন আর সড়ক প্রসস্থ্য করনের দাবি দির্ঘদিন ধরে জানানো হলেও কাঙ্খিত উন্নয়নে সাড়া নেই বন্দরের। এতে ভোগান্তি এখন নিত্য দিনের সঙ্গি হয়েছে ভুক্তভোগীদের।
বেনাপোল সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, সংকীর্ণ সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকের যানজটে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো আটকা পড়ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এতে যাত্রী ভোগান্তি বেড়ে চলেছে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানায়, বেনাপোলে আমদানি পণ্য থেকে প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ও ভ্রমন ক্ষাতে ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি রাজস্ব আয় হয়। বন্দরে পণ্যগার সংকটে আমদানির পরিমান দিন দিন কমে আসছে। এতে এখন রাজস্বও ঘাটতি বেড়ে চলেছে। বন্দর কিছু কিছুউন্নয়ন মুলক কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তার সুফল ব্যবসায়ীরা পায়নি। পদ্মা সেতু এমাসেই চালু হচ্ছে। তখন বাণিজ্য আরো বাড়বে।
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দেশের সরকার অনুমদিত ২৪ টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সাথে বাণিজ্যের চাহিদা রয়েছে মাত্র ১২টি বন্দর দিয়ে। অনান্য বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের চাহিদা না থাকায় এখন আমদানি-রফতানি শুরু হয়নি। সেখানে অযাথা কর্মচারীদেও বেতন ও জমি কিনে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে। রাজনৈতিক চিন্তা এড়িয়ে বাণিজ্যিক মনোভাব নিয়ে গুরত্বপূর্ণ বন্দরগুলোর উন্নয়ন করতে হবে। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে সরকারের ও রাজস্ব বেশি আসবে।
বেনাপোল বন্দর ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, বন্দরে চাহিদা অনুপাতে জায়গা না পেয়ে ট্রাক চালকরা সড়কের উপর পণ্য নিয়ে দাড়িয়ে থাকছে। এতে সব সময় যানজট লেগে থাকছে। বাণিজ্য ও পথচারীদের দূর্ভোগ বাড়ছে। বন্দরে ট্রাক টার্মিনাল আর ৬ লেন সড়ক হলে পণ্যজট ও যানজট থেকে মুক্তি মিলবে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক(ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, বাণিজ্যক সুবিধা বাড়াতে ইতিমধ্যে বন্দরের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। তবে এসব কাজ শেষ হতে এখনও ৩ বছর সময় লাগবে।