যথাযোগ্য মর্যাদায় মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শহিদ শেখ রাসেল দিবস পালিত হয়েছে। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে দিবসটি পালন করা হয়।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘শেখ রাসেল/নির্মলতার প্রতীক/দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’। দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল শহিদ শেখ রাসেলের স্মৃতি বিজড়িত প্রিয় বিদ্যাপীঠ ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহিদ শেখ রাসেলের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, কেক কাটা, আলোচনা সভা প্রভৃতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালি ‘শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার এবং ৬টি স্মার্ট বোর্ড’ উদ্বোধন করেন।
সকাল ১১টায় ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শহিদ শেখ রাসেলের শিশু কিশোর জীবনের উপর আলোকপাত করে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। শহিদ শেখ রাসেলের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপাচার্য বলেন, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহিদ শেখ রাসেলের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জমায়েত হয়েছেন। শহিদ শেখ রাসেলের স্মৃতি বিজড়িত এই স্কুল ক্যাম্পাস আজ এক পুণ্যভূমিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, ‘অসাধারণ কিছু গুণের অধিকারী ছিলেন শিশু রাসেল। তিনি অত্যন্ত সৎ, স্পষ্টভাষী, বন্ধুবৎসল ও অনন্য মানবিক মূল্যবোধের অধিকারী ছিলেন। অপার সম্ভাবনাময় ও বিরল প্রতিভার অধিকারী সেদিনের ছোট্ট রাসেল বেঁচে থাকলে আজ ৫৯ বছরের পরিণত মানুষ হতেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে নেতৃত্ব দিতে পারতেন। কিন্তু ঘাতকদের নির্মম বুলেট সেটি হতে দেয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঘাতকরা শিশু রাসেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করে। শেখ রাসেল তখন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।’ শহিদ শেখ রাসেলের মূলবোধ ধারণ করে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য উপাচার্য নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিসেস সেলিনা আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি এক্স-স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন (ইউলেসা)-এর সভাপতি নাঈম আহম্মেদ খান, শহিদ শেখ রাসেলের সহপাঠী অধ্যাপক ফওজিয়া বানু এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাইফ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হালিম।
উল্লেখ্য, আলোচনা পর্ব শেষে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে শহিদ শেখ রাসেল স্মৃতি বৃত্তি এবং কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ সকালে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে স্থাপিত শহিদ শেখ রাসেলের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।