নিজস্ব প্রতিবেদক :
অন্যায়ভাবে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ,হুমকিসহ সারাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের উপর দমনপীড়ন, মামলা- হামলার প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ করে আজ বুধবার গণপদযাত্রা করে গণঅধিকার পরিষদ।
কালো ব্যাজ ধারণ করে পদযাত্রাটি বিকাল ৪ টায় গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে, বিজয়নগর পানিরট্যাংকি,নাইটিংগেল মোড়,ফকিরাপুল, পুরানা পল্টনে হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুলহক নুর বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী মত দমনের মিশনে নেমেছে। যখন এই সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ ৫৪ টি দল রাজপথে সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য যুগপৎ আন্দোলন করছে তখন সরকার ভয় পেয়ে দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, সরকার গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে ও পুলিশকে দিয়ে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। গণঅধিকার পরিষদ খুলনা জেলা ও বাগেরহাট জেলার সদস্য সচিবদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। যেখানে লোকটি বিড়ি,সিগারেট খায় সেখানে আমাদের খুলনা জেলা সদস্য সচিব হামিদুর রহমান রাজীবকে গাঁজা দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।একইভাবে আমাদের বাগেরহাট জেলার সদস্যসচিবকে জামায়াতের মামলায়।
পুলিশ ক্রেডেবিলিটি হারাচ্ছে উল্লেখ করে নুর বলেন, বিরোধী মত দমনে সরকার আবারও মামলা-হামলার পুরানো পথ বেছে নিয়েছে। পুলিশ এভাবে মিথ্যা মামলায় মানুষকে ফাঁসিয়ে নিজেদের ক্রেডেবিলিটি হারাচ্ছে,তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।গুটি কয়েক দুর্বৃত্তদের কারণে পুরো বাহিনী এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না।তাই পুলিশকে এ ধরণের জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। সরকার আবারও পাতানো নির্বাচন করতে অনেক দলকে সিটের প্রলোভন দেখাচ্ছে। আমরা সরকারের এমন পাতানো নির্বাচনের স্বপ্ন কখনও পূরণ হতে দিবো না।
নুর আরও বলেন, ১৪ বছরে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পরিকল্পিতভাবে সেনা অফিসার হত্যার ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার না হওয়া প্রমাণ করে এ ঘটনায় সরকার জড়িত। সামনে বিরোধী দলকে ফাঁসাতে সরকার পুলিশকে নিয়েও নীলনকশা করছে। এ সরকারের হাতে এখন কেউ নিরাপদ নয়।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, একের পর এক বিদ্যুৎ এর দাম বাড়ছে, গ্যাসের দাম বাড়ছে,দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি বাজারে অনেক ঔষধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, শিশু খাদ্য আমদানিতে সংকট। সামনে আরও ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। ইউরোপ-আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার ভয়ে সরকার এখন দলীয় নেতা-কর্মীদের টাকা পাচারের জন্যকঙ্গো, সুদান, লাইব্রেরিয়া, ঘানা, ইরিত্রিয়া, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডার মতো সংঘাতপূর্ণ ও দুর্ভিক্ষে পীড়িত দেশে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ দিচ্ছে। তাই দেশ ও মানুষকে বাঁচাতে আমাদেরকে সরকার পতনে আন্দোলনে নামতে হবে।জাতির মুক্তির একমাত্র পথ সরকারের বিদায়।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, “মানুষ ভাত পাচ্ছে না, আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ১৫ পদের মাছ দিয়ে ভাত খাচ্ছেন। মানুষের কষ্টের মধ্যে রাষ্ট্রপতি উৎসবের আয়োজন করেছেন। এই হলো মানুষের প্রতি তাদের দরদ। তথ্যমন্ত্রী আমাদের টোকাই মনে করেন। এই হলো মানুষের প্রতি তাদের মর্যাদা। এই ভোটচোর সরকারের কারও প্রতি দায়বদ্ধতা নেই। আগামীতে ১৪ ও ১৮ সালের মত ভোটচুরি করতে দেওয়া হবেনা। দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবেনা। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রের সরকারকে ক্ষমতায় এনে জনগণকে বাঁচাতে হবে।”
পদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ,ড.মালেক ফরাজী, শহিদুল ইসলাম ফাহিম,শাকিলউজ্জামান, পাঠান আজহার, যুগ্ম সদস্যসচিব মশিউর রহমান,তারেক রহমান,ফাতেমা তাসনিম, জিলু খান,এডভোকেট শিরিন আক্তার, শামসুদ্দিন, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল, ঢাকা দক্ষিণের সদস্যসচিব ঈসমাইল,ঢাকা জেলার আহ্বায়ক এডভোকেট সৈকত,ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান,শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।