তাসনীম তামান্না:
বাংলাদেশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ঢাবি ইউনেস্কো ক্লাবের তিন সদস্য আন্তর্জাতিক ফোরাম, ‘ইয়ুথ লিডিং ফর পিস’ নামক বিশ্বসম্মেলনে সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে তুলে ধরেছেন।
গত ৩০-৩১ জুলাই দু’দিনব্যাপী চলা এই সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের অংশগ্রহণে ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্ম জুম মিটিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কাজাখস্তানের স্বাধীনতা দিবস এবং সেমিপ্লাটিনস্ক পারমাণবিক পরীক্ষা সাইট বন্ধে উভয়ের ৩০বছরের পূর্তিতে উক্ত সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এটির মূল আয়োজক ছিল কাজাখস্তান ফেডারেশন অব ক্লাবস ফর ইউনেস্কো অ্যান্ড সুলেইমান দেমিরেল ইউনিভার্সিটি। ইউনেস্কোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রত্যেকে দেশ থেকে ১৬-২২ বছর বয়সী সর্বোচ্চ তিনজন প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছেন।
এ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য : তরুণ প্রজন্মকে পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করা, অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কীভাবে ভ্রাতৃত্ব বজায় রেখে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা-পর্যালোচনা করা হয়।
সম্মেলনে প্রেজেন্টশনের বিষয় দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। (১) পারমাণবিক শক্তিযুক্ত দেশ এবং (২) পারমাণবিক শক্তিবিহীন দেশ।
যেইসব দেশগুলোতে পারমাণবিক পাওয়ার প্লান্টের অস্ত্রশস্ত্র আছে ; তাঁরা সেসবের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরে কীভাবে সেগুলো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে – সেবিষয়গুলোর উপরে সবিস্তরে উপস্থাপনা করেন।
অন্যদিকে, যেসব দেশের পারমাণবিক পাওয়ার প্লান্টের অস্ত্রশস্ত্র নেই; সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁরা পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্র এবং পাওয়ার প্লান্ট কীভাবে বিশ্বশান্তি রক্ষা কিংবা প্রতিষ্ঠায় বিরূপ প্রভাব বিস্তার করছে ; এমন উত্থাপিত বিষয়গুলো উপস্থাপন করে।
উল্লেখ্য, ২৭জুলাই-এ অংশগ্রহণকারী প্রতিটি ইউনেস্কো ক্লাব তাঁদের দলীয় প্রেজেন্টেশন জমা দিয়েছেন। এছাড়াও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হয় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সদস্য প্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণে।
বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারী ঢাবির একটি টিমের তিন সদ্যসরা হলেন ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী যথাক্রমে আমিনুল ইসলাম( ৪র্থ বর্ষ), ইসরাত জাফরীন (৩য় বর্ষ),আসনাফ জামান তন্নি(২য় বর্ষ)।
প্রথম সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, “উক্ত সম্মেলনে যুক্ত হওয়ার জন্যে আমাকে পারমাণবিক অস্ত্র, পরীক্ষা এবং এর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে অনেক গবেষণা করতে হয়েছে। যার ফলে আমি এই বিষয়ে অনেক নতুন নতুন তথ্য জানতে পেরেছি। এছাড়াও এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমি জেনেছি কিভাবে নিজের দলকে নিয়ে কাজ করতে হয় এবং নেতৃত্ব দিতে হয়।”
দ্বিতীয় সদস্য ইসরাত জাফরীন বলেন, “এখানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র ও পাওয়ার প্লান্ট সম্পর্কে নতুন তথ্য জানতে পেরেছি। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে মত বিনিময়ের ফলে পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের দেশের অবস্থান জানার পাশাপাশি তাদের চিন্তাধারা সম্পর্কে জেনেছি। নতুন কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে।”
আরেক সদস্য আসনাফ জামান তন্নি বলেন, “সম্মেলনের
এই প্রজেক্টে দলগতভাবে কাজ করাটা আমার জন্য দারুণ সৌভাগ্য ছিল। এখানে কাজ করে পারমাণবিক শক্তি ও এর অপশক্তির ব্যবহার নিয়ে অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে, যা আগে কখনো জানতাম না! আর অনেক বিদেশি প্রতিনিধি ও তাদের ধ্যান-ধারণা সম্পর্কেও বেশ অবগত হয়েছি। সব মিলিয়ে এটা আমার জন্য চমৎকার একটি অভিজ্ঞতাও বটে।
এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে অংশগ্রহণকারীদের লিডারশীপ স্কিল,পাবলিক স্পিকিং স্কিল এবং প্রেজেন্টেশন স্কিলের উন্নতি এবং বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হয়েছেন।