নিজস্ব প্রতিবেদক:
পরীমনির ন্যায় বিচার ও মুক্তি দাবিতে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’ ব্যানারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা আকরামুল হকের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফ্লিম এন্ড মিডিয়া সোসাইটির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নাট্য পরিচালক মোস্তফা মনন, চলচিত্র নির্মাতা রশিদ পলাশ, ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি গোলাম মোস্তফা, প্রকাশক রবিন আহসান প্রমুখ।
এছাড়া ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য রেখেছেন ছিলেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ডিন সাদেকা হালিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েরনৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, পরীমনি একজন নাগরিক। সে সাংবিধানিক সকল অধিকার পাওয়ার যোগ্য। আমরা বিভিন্ন আইনজ্ঞের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি যে পরীমনির যে অপরাধ তা জামিনযোগ্য অপরাধ। কিন্তু তাকে জামিন না দিয়ে বারবার রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। সে মিডিয়া ট্রায়াল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুলিংয়ের শিকার। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, একজন মানুষ যিনি একটা অপরাধের শিকার হয়ে একসময় মামলা করেছে সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নানাভাবে প্রশ্ন করা হচ্ছে, এবং হেনস্থা করা হচ্ছে। এবং শেষ পর্যন্ত তাকে হেনস্থা করার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিজের হাতেই তুলে নিছে তার জন্য আজকে আমরা দাড়িয়েছি আর এটার থেকে দুঃখজনক ও বিব্রতকর কোনো ঘটনা সমাজে হতে পারেনা। শিশুর বয়সী একজন নারীকে যেভাবে র্যাবের দ্বারা যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, পরীমনি কি মাফিয়া লিডার? পরীমনি কি কাউকে হত্যা করেছে?পরীমনি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল, পরীমনি গলা উঁচু করে কথা বলেছিল এটাই পরীমনির দোষ! বাংলাদেশের বড় বড় অপরাধী, দুর্নীতিবাজদের ছেড়ে একজন শিল্পীর পেছনে কেন লাগা হয়েছে সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
এদেশের একজন নারী ও নাগরিক হিসেবে তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। পরিমনি বাড়িতে মদ খাবেন না বিষ খাবেন এটা
তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এই বিষয়ে কারো নাক গলানোর অধিকার পরীমনি দেননি।
পরীমনির মুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি তো চলচ্চিত্র বান্ধব, শিল্প বান্ধব প্রধানমন্ত্রী। আপনি তো সব জানেন, সব দেখেন। আপনি পরীমনির উপর সদয় হোন, তাকে মুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। পরীমনি তো আপনার সন্তান, সে আপনাকে মা ডেকেছে। আপনার নিকট আমাদের বিশেষ অনুরোধ, আপনি বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করে তাকে মুক্ত করে দিন। আমাদের চলচ্চিত্র এমনিতেই দুর্ভিক্ষ চলছে, এর মধ্যে পরীমনির মতো নায়িকা এভাবে আটক থাকলে আমরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
পরীমনি মুক্তিতে যারা কথা বলছে না তাদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, আজকে যারা পরিমনির বিচার চাইছেন, পরিমনির মুক্তি চাইচেন না, তার প্রতি যে অন্যায় হচ্ছে সেটার প্রতিকার চাইছেন না, আপনাকেও কালকে যদি সামান্য মদ খাওয়ার অভিযোগে আটক করে রাখা হয় সেটা ভালো লাগবে? আমি জানি আজকে যেসব সংবাদপত্রগুলো, যে মানুষেগুলো পরিমনির মদ খাওয়া বিষয়ে তার চরিত্র নিয়ে ট্রল করেছেন প্রায় শতভাগকে যদি আজ আমি বিনা পয়সায় মদ খেতে ডাকি তারা ভিখারির মতো এসে মদ খেতে বসে যাবে। পরিমনি যদি তাদের কারো সাথে সাক্ষাতের জন্য ডাকে তবে তারা ভিখারির মতো ছুটে যাবে।