Monday, November 11, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'কালো দিবস' পালিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কালো দিবস’ পালিত

নবদূত রিপোর্ট:

২০০৭ সালের ২০-২৩ আগস্ট সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী তথা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের উপর সংঘটিত নির্যাতন স্মরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কালো দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাবির শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। এছাড়া
বেলা ১১টায় দিবসটি উপলক্ষে প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানীসহ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের গণবিচ্ছিন্ন কিছু মানুষ ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক পন্থায় সেদিন ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের সম্মিলিত প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতালিপ্সু সেই অপশক্তি পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। এসব ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ২০০৭ সালের ২০-২৩ আগস্ট বিভীষিকাময় ঘটনাবলীর স্মৃতিচারণ করে বলেন, “সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু’র রাজনৈতিক জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা তখন সম্মিলিতভাবে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলাম। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অপশক্তির অপশাসনের অবসান চেয়েছিলাম। গণমানুষ আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিল। ফলে আমাদের আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছেছিল এবং আমরা দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলাম।

দেশের রাজনৈতিক ধারা বাধাগ্রস্ত হলে সমগ্র জাতি বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একারণে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব ও মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখা জরুরি। উপাচার্য ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সেনা ক্যাম্প স্থাপন এবং ক্যাম্প স্থাপনের অনুমতি দেয়ার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, তা ছিল প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বহীনতার চরম বহি:প্রকাশ।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, সে আন্দোলনের সময় আমি নীল দলের আহ্বায়ক ছিলাম। সে দিন তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষক সমিতি ভালো ভূমিকা পালন করেনি। সকল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দও হামলা-মামলা নির্যাতন হয়েছে। আন্দোলনের চাপে শিক্ষক-ছাত্রদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।  আমরা এ দেশে আর সেনা শাসন চাই না। যেভাবে সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক অবস্থা দেশে বিরাজ করছে আমরা এভাবেই চলবে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবাদ করেছে। এছাড়াও সকল আন্দোলন সংগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিরাট ভূমিকা রেখেছে।অন্যায়-অপকর্ম করার জন্য এদেশের স্বাধীনতাবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক অপশক্তি বারবার চেষ্টা করে। যতই ষড়যন্ত্রই আসুক না কেন, সকল ষড়যন্ত্রকে আমরা প্রতিহত করব।

এছাড়াও কারা নির্যাতিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, কারা নির্যাতিত ছাত্রনেতা মানবেন্দ্র দেব ও মো. তৈয়ব আলী সে সময়ের স্মৃতিচারণ করেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular