নবদূত রিপোর্ট:
রাজনীতিবিদের উদ্ভাবনী সৃজনশীল রাজনীতির পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
শনিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক একটি সেমিনার ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সেমিনারটির আয়োজন করেছে।
উপাচার্য বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে সেকুলারিজম তা না চাইনিজ না রাশিয়া। তাঁর মতাদর্শ সম্পূর্ণ আলাদা এক মডেল। এটি বাংলাদেশ এবং বাঙালির মডেল। ধর্মীয় মূল্যবোধ সেটির প্রতিও বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধা, সেইসাথে অন্য ধর্মমতকে বিকশিত করা এবং সকল ধর্মের প্রতি একটি সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি রেখে সেই মূল্যবোধকে বিকাশ ঘটানো। এটি বঙ্গবন্ধুর নিজস্ব এক মডেল যা ঐ দুটির সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। বর্তমান বাংলাদেশ তার মডেলের উপর নির্ভর করে চলছে। এবং বিশ্ব অবাক করে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশের দিকে। আজকে যতই আমরা বঙ্গবন্ধুর চর্চা করছি ততই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অবস্থান খুবই সুদৃঢ়। এর কারণ হলো বঙ্গবন্ধু নীতি দর্শন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু যে নীতিদর্শন ও পলিসি করেছিলেন এবং যেগুলো এখন প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়নের প্রয়াস নিচ্ছেন তা বিশ্ববাসীকে হতচকিত করছে। বিশ্ববাসী এই নীতি দর্শন গ্রহণ করছে। বিশ্ববাসী মনে করছি এশিয়ার এই অংশে এই ভূখণ্ডে একটি দর্শন এর উত্থান ঘটেছে যা আসলেই গ্রহণযোগ্য। আর এই নীতি দর্শন SDG বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে। জাতিসংঘ ম্যান্ডেট যে SDG যেটি বাস্তবায়ন করতে পৃথিবীর সকল দেশ বাধ্য, সেই SDG বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু নীতি দর্শন ও প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ড ভূমিকা রাখছে।
রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য করে ঢাবি উপাচার্য বলেন, কে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের অংশ, কে পাকিস্তানপন্থী এবং সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অংশ। সে বিষয়গুলো এখন সংগঠনের মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন নীতি কৌশল অবলম্বন করে চিন্তা করতে হবে।উদ্ভাবনী সৃজনশীল রাজনীতি প্রয়োজন এবং সেটাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন। বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র দর্শনে তিনি যেমন অগ্রগামী চিন্তা করতেন ঠিক তেমনিভাবে আমাদের অনুসরণ করা উচিত। বঙ্গবন্ধু তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী, সৌজন্যবোধহীন ও মূল্যবোধহীন মানুষদের চিনতেন। কিন্তু হিমালয়ের মতো মনমানসিকতা, উদার ও সুউচ্চ দৃষ্টিভঙ্গি হওয়ার কারণে সকলকে ধারণ করতেন বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ. কে. এম. আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী এবং মহাসচিব জনাব রঞ্জন কর্মকার।