নবদূত রিপোর্ট:
টানা ১৭ মাস বন্ধের পর আজ খুলেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ অচলাবস্থা শেষে দেশজুড়ে সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় শুরু হয়েছে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান। এ নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় চলছে উৎসবের আমেজ। এবার দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকল স্কুল ও কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকা সত্ত্বেও খোলার কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।শিক্ষামন্ত্রনালয় থেকে দায়সারাভাবে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের কর্তৃপক্ষ চাইলে যেকোন সময় খুলতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাদের এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার প্রস্তুতি নেই। যদি শিক্ষামন্ত্রনালয় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সদিচ্ছা থাকতো, তারা অবশ্যই পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রস্তুত করতে নির্দেশনা দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে খোলার ব্যবস্থা করতো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রনালয়ের এমন অদূরদর্শীতায় শিক্ষার্থীরা হতাশা ও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। সেশন জট, আবাসন সমস্যা, পরীক্ষা আটকে থাকা, ক্লাস-পরীক্ষা সশরীরে অংশগ্রহন করতে না পারা সমস্যাগুলোর সমাধানের লক্ষে আমরা গত ফেব্রুয়ারী থেকে সারাদেশে আন্দোলন করে আসছি। দেশে পর্যাপ্ত টিকা থাকা সত্ত্বেও তারা টিকাকে ইস্যু করে হল ও ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ রেখেছে। যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে নড়বড়ে ও নাজুক অবস্থায় নিয়ে গেছে। অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ১ম, ২য় ডোজ টিকা প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং টিকা গ্রহীতা সাপেক্ষে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহন না করা বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত।
স্কুল-কলেজ খুলতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয় কেন নয় প্রশ্ন তুলে এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের থেকে অধিক স্বাস্থ্য সচেতন এতে সন্দেহ নেই।
টিকাই যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কারন হয়ে থাকে, তাহলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কিভাবে বিনা টিকায় ক্লাস ও পরীক্ষা দেয়ার অধিকার রাখে? তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গিনিপিগ বানিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে? যেহেতু বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীরা সবাই ১৮-২৭ বছরের মধ্যে, তাদের টিকা বাধ্যতামূলক না করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মতো ক্লাস ও পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্বে ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে বাধ্য হবে বলে উল্লেখ করে বলা হয়, দীর্ঘ ৬১ সপ্তাহ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। টিকা স্বল্পতা যেহেতু নেই, সংক্রমন হার যেহেতু কম, সেহেতু কোন কারনেই হল ও ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। শিক্ষামন্ত্রনালয় যদি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার দ্রুত নির্দেশনা না দেয়, তবে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্বে তাদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে বাধ্য হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।