নবদূত রিপোর্ট:
অনলাইনে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী রাজীব মোহাম্মদ। পরীক্ষায় থাকা অবস্থায় রাজীব টের পেয়েছেন, মায়ের কিছু হয়েছে। জুম প্লাটফর্মে কেঁদে দেন রাজিব। দায়িত্বরত শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষা থেকে বের হওয়ার পর জানলেন, মা আর পৃথিবীতে নেই।
রবিবার (২৬ মার্চ) সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
একই বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ মিয়া বলেন, আজ সকালে আমাদের অনলাইন পরীক্ষা শুরু হয়। হটাৎ রাজীব হঠাৎ ম্যামকে ডাকা শুরু করেছে। এর মধ্যেই হঠাৎ আমরা একটা চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই। রাজীব কেঁদে দেয়। পরে ম্যাম এসে বলে রাজীব, তোমার কী হয়েছে? রাজীব বলে, ম্যাম আমার আম্মুর কী যেন হয়েছে। আমাকে লিভ নিতে হবে। ম্যাম কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে তিনি রাজীবকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়। পরীক্ষা শেষে বের হওয়ার পরে শুনতে পাই রাজীবের আম্মু মারা গেছে।
রাজীবের মায়ের মৃত্যুর পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস রাজীবের অন্য এক সহপাঠী আল আমিন সরকার লিখেন, অনলাইন পরীক্ষা চলছিল। প্রায় ৩০ মিনিট অতিক্রান্ত হয়েছে এমন অবস্থায়, হঠাৎ কান্নার শব্দ পেলাম। ডিসপ্লেতে তাকিয়ে দেখি বন্ধু রাজীবের চোখে পানি। রাজীব বলতেছে, ম্যাম, ম্যাম….., ম্যাম, আমি কী লিভ নিতে পারি! আমার মায়ের কী যেন হয়েছে।
এক মিনিট পর লিভ নেওয়ার অনুমতি পেলেন তিনি। এইতো কিছুক্ষণ আগে শুনলাম তার মা আর ইহজগতে নেই! আমরা পরীক্ষা শেষ করে কেবলই একটা ফুরফুরে মেজাজে হাসিখুশিতে মেতে উঠছিলাম আর বন্ধুর জীবনে কত বড় পরীক্ষা হয়ে গেল। মৃত্যু কত নিষ্ঠুর কখন ডাক আসবে কেউ জানে না। আল্লাহ উনাকে মাগফিরাত দান করে জান্নাত দান করুক এবং আমার বন্ধু ও তার পরিবারকে যেন ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন, আমিন।
অনলাইন পরীক্ষার পরিদর্শক এবং বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা নেহরীর খান বলেন, অনলাইন পরীক্ষার ভিতর রাজীব বলল মায়ের কাছে যাবে। তারপর সে লিভ নিল। পরীক্ষা শেষে আমরা জানতে পারি তার মা মারা গিয়েছে। আমাদের বিভাগের সবার জন্য এটি মর্মান্তিক ঘটনা। তার মায়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।