নবদূত রিপোর্ট:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের দুই শিক্ষার্থীকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তারা হল থেকে বের হয়ে না গেলে মেরে হলের পানির ট্যাংকের উপরে ফেলে রাখার হুমকিও দেয়া হয়। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন- উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহ সিফাত ও আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের অধীনে ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাঙুয়েজেস বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান অর্পণ। তারা দুজনেই ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৮ সালে অর্থনীতি বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিলো।
ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী হচ্ছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ আরিফুল ইসলাম। তিনি অত্র হলের সাবেক হল সংসদের সদস্যও ছিলেন।
এবং তরিকুল ইসলাম থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, রোববার রাত ২টা ৪৫ মিনিটে ওই দুই শিক্ষার্থীকে সূর্যসেন হলের ৩৫১ নম্বর রুমে ডেকে নেন সিফাত ও অর্পণ। পরে সেখানে থাকা আরও চারজন মিলে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চালান। নির্যাতনের একপর্যায়ে ‘হল থেকে বের না হয়ে গেলে তোদেরকে মেরে হলের ট্যাংকের উপরে ফালাই রাখমু’ বলে হুমকি দেন অভিযুক্তরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলেন, সিফাত এবং অর্পণ আমাদের অকথ্য ভাষায় আমাকে, আমার মা এবং মৃত বাবাকে গালাগালি করে। এর আগেও আমাকে রুম থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল তা না পারায় আমাকে রড দিয়ে মারতে আসে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে একজন রড ধরে ফেলে কিন্তু সিফাত আমাকে দেয়ালের উপর সজোড়ে আঘাত করে। তাতে আমার পায়ে এবং মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগে। তারপর জোর করে আমার ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয় এবং অনেকক্ষন ধরে আমার মোবাইল চেক করে।
তিনি আরো বলেন, আজ আমরা যদি দুজন না হয়ে একজন হতাম তাহলে নিঃসন্দেহে আরেকটি আবরার ফাহাদ হত্যার মতো ঘটনা ঘটতো। দুই জন থাকায় তা পারেনি। এমতাবস্থায় আমরা মারাত্মক জীবন নাশের হুমকীতে আছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিফাত এবং অর্পণকে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মকবুল হোসেন ভূঁইয়া এ ব্যাপারে বলেন, এই ঘটনায় আমরা দুই পক্ষকে ডেকেছি। তারপর বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, হল প্রশাসনের সাথে আমার কথা হয়েছে। হল প্রশাসন দ্বায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি দেখতেছেন