আবরারের বাবা মা ও পরিবার আবরারকে হারিয়েছে, বুয়েট হারিয়েছে একটি মেধাবী ছেলে, জাতি হারিয়েছে একটি দেশপ্রেমিক মেধাবী ছেলে। খুব কষ্ট লাগছিল যখন আবরারকে হত্যার খবর শুনে৷ সকালে উঠেই এই খবর শোনা মাত্র চোখের সামনে ঘটা ছাত্রলীগের বিভিন্ন নির্যাতনের দৃশ্য চোখে ভাসছিল। প্রতিবাদ না করলেই নয়। আবরার হত্যার প্রতিবাদে তখন আমরা ভিপি নুরের নেতৃত্ব দলমত নির্বিশেষে আন্দোলন করি বিক্ষোভ মিছিল করি সারাদেশে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল করে। আমরা ছাত্ররা ওইসময় প্রতিবাদ না করলে হয়তো এত দ্রুত এর বিচার কাজ সম্পন্ন হতো না৷
আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ২০ জনের মৃত্যদণ্ড ও ৫ জনের যাবত আজীবন কারাদণ্ড হলো। এই ২৫ জন ও তাদের পরিবারের স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়ে ইঞ্জিয়ার হবে, শিক্ষক হবে, কেউ স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপে পড়বে৷কিন্তু তারা বুয়েটে এসেই নোংরা রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গেল। রাজনৈতিক বড় ভাইদের কথামত বেপরোয়া হয়ে গেল৷সেই বড় ভাইয়েরা আজ কোথায়? ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মহামান্য আদালত ২০ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে কিন্তু ২০ জনের মধ্যেও কেউ হয়তো সরাসরি জড়িত নয়। অনেকের হয়তো সিসি টিভিতে ছবি এসেছে তারা হয়তো রুমে উকি দিতে গেছে, কেউ হয়তো আড্ডা দিতে গেছিল, কেউ হয়তো বড় ভাইদের কথামত অন্যকে ডাকতে গেছিল কিন্তু তারা হয়তো জানতো না আবরার কে মেরে হত্যা করে ফেলবে। তারা আজ বলির পাঠা হলো।আশা করি তারা উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবে৷যাবতজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন যাদের নির্দেশে আবরারকে হত্যা করা হয় তারাও হয়তো উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হতে পারে৷ অমিতশাহ নামে একজন আছে আবরার নির্যাতনে প্রস্রাব করে দিয়েছে এটার শোনার পরও সে নির্দেশ দিয়েছে আবরারকে পেটানোর৷তার অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল৷আশা করি আমরা ন্যায়বিচার পাবো৷
মেধাবী মুখগুলো ক্যাম্পাসে এসেই উগ্র ও সন্ত্রাসী হয়ে গেল৷ তাদের পরিবার তো তাদের সন্ত্রাসী হতে পড়াশোনা করায়নি৷ তাহলে এগুলোর দায়ভার কার? অবশ্যই ছাত্রলীগের। ছাত্রলীগের নোংরামি ও সন্ত্রাসি কার্যকলাপের কারণেই আজ আবরারসহ ২৫ টি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল৷ শেখ হাসিনা বলেছিল তিনি নাকি ছাত্রলীগের হাতে খাতা কলম তুলে দিয়েছে কিন্তু আমরা ক্যাম্পাসগুলোতে দেখলাম ছাত্রলীগের হাতে রড, হাতুরি, হেলমেট, হকিস্টিক। ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ভুলে গিয়ে পাঠচক্র তৈরি না করে আজ আবাসিক হল গুলোতে গেস্টরুম ও টর্চার সেল তৈরি করেছে যেখানে আবরারের মত হাজার হাজার ছাত্রদের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। নির্যাতন করা হয়৷ আবরার নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে মরে গেছে কিন্তু হাজার হাজার আবরার ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
খুব কষ্ট লাগছে ২৬ টি পরিবারের জন্য৷ সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নাই৷ প্রতিটি পরিবার ও অভিভাবকদের বলব বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পরপরই আপনার দায়িত্ব শেষ নয়, খেয়াল রাখুন আপনার ছেলে সন্তানের ছাত্রলীগের লাঠিয়াল বাহিনীর হয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে কিনা!
মোঃ সোহরাব হোসেন
যুগ্ম আহ্বায়ক, গণঅধিকার পরিষদ