নবদূত রিপোর্ট:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, গত ৫০ বছরে আমাদের কী অর্জন, কী হারিয়েছি তার কোনো মূল্যায়ন হয়নি। আন্তঃসমীক্ষা হয়নি। তবে এই সময়ে একটাই অর্জন বাঙালি জাতীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ অর্জন আমাদের স্বাধীনতা। তিনি বলেন, পুলিশ হেফাজত, ক্রসফায়ারের নামে মানুষকে মারা হয়, হকস্টিক দিয়ে পিটিয়ে মারা হলো আবরারকে, পৃথিবীর কোথাও কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন হয় কিনা জানা নেই, এ বাংলাদেশে এটা হয়েছে।
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের মার্কিন ভিসা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই লিস্টটা আরও বড়। আরও অনেকেই এই তালিকায় আছে।
ছাত্র যুবকেরা এই দেশকে বাচাতে পারে। সব ধরনের অনিয়মের প্রতিবাদ করতে হবে তরুণদেরই। লড়াই করতে হবে পৃথিবীর কোথাও স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, কর্তৃত্ববাদ আপোষে যায়নি, বাংলাদেশও যাবে না। তাদের ঝাড়ু, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বের করতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে এটি করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও রাষ্ট্রচালকেরা মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা করতে পারেনি। কত বুদ্ধিজীবীদের আমরা হারিয়েছে সে স্পষ্ট তথ্য নেই। বর্তমান সরকার তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থেকেও তা করেনি। অথচ মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র দাবিদার আওয়ামী লীগ দাবি করে।
বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও ইতিহাস ভাসানীকে ছাড়া লেখা সম্ভব নয়। অথচ ভাসানীর নাম কম নেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ কোনো একটি বিশেষ দলের নয়, এটা পুরো একটা জাতির যুদ্ধ ছিল যার নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। যতবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে। যদি কাউকে চেষ্টা করে দেবতা বানানো হয়, সেটা সম্ভব নয়।
নুর আরও বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
অধ্যাপক লতিফ মাসুম বলেন,১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার পরও স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে আরও দুটি হত্যাকান্ড ঘটে, তা হচ্ছে জহির রায়হান এবং শহিদুল্লাহ কাওসার। যে কোন জাতির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীদের অবদান রয়েছে তারা জাতিকে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করতে সহায়তা করেন।
মেজর জেনারেল( অবঃ)সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সেই ১৪ ডিসেম্বরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,১৪ ডিসেম্বর কি হয়েছিলো তা তাৎক্ষণিক জানতে পারি নাই, জানতে পেরেছি বিজয়ের পর।
তিনি অভিযোগ করে বলেন বর্তমানে তাদেরকেই হত্যা করা হচ্ছে যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেন।
গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন,আজকে বুদ্ধিজীবীদের মধ্যেও দলীয়করণ। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা এখনো বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রকৃত পরিসংখ্যান জানিনা। এটা জাতির জন্য লজ্জার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১০০ শিক্ষক এই ভোটডাকাত শিক্ষককে লিখিত স্বীকৃতি দিয়েছে। এই হলো বর্তমান বুদ্ধিজীবীদের বিবেক বিক্রি। ধিক্কার জানাই এসব দলীয় বুদ্ধিজীবীদের।
গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লার উপস্থাপনায় আরও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা ভাসানীর নাতি হাসরত খান ভাসানী, গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব কুমার পোদ্দার, মাহফুজুর রহমান খান,সোহরাব হোসেন প্রমুখ।