Saturday, September 21, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনশাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৫ দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে খোলা চিঠি

শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৫ দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে খোলা চিঠি

নবদূত রিপোর্ট:

দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ ও ৫ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদকে খোলা চিঠি দিয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) এই চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ জন শিক্ষক। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো, ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলার সুষ্ঠুতদন্ত ও বিচার করা, আন্দোলনে অর্থায়নের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সাবেক শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহার করা এবং আন্দোলনকারীদের পরিবারের উপর পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা।

চিঠিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি যে, শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি নিয়ে মধ্য জানুয়ারি থেকে চলমান অহিংস আন্দোলনকে সরকারী ছাত্র সংগঠন ও পুলিশ বাহিনীর সহিংসতা দিয়ে দমনে ব্যর্থ হয়ে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একের পর এক নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে যা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ইতিহাসে এক কদর্য অধ্যায়ে পরিণত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  শুরু হওয়া একটি ন্যায্য আন্দোলন এই সমস্ত পদক্ষেপের কারণে আজ শাবিপ্রবির নিপীড়িত শিক্ষার্থীদের মরণপণ একদফা দাবির আন্দোলনে পরিণতে হয়েছে যে উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।

নিজের কৃতকর্মে ন্যূনতম শিক্ষকসুলভ মনোভাবের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হওয়া এই উপাচার্য শাবিপ্রবির দায়িত্বে থাকবার সমস্ত নৈতিক ও আইনী অধিকার হারিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে এবং তার আশু পদত্যাগ দাবি করছে। 

চিঠিতে আরো বলা হয়, নেটওয়ার্ক আরও বিস্ময় ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছে যে বিগত দুইদিনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও খাবারের যোগান নানা কদর্য কৌশলে বন্ধ করে প্রায় ১৫০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে অনশনরত ২৮ জন শিক্ষার্থীর জীবনকে এই মহামারির সময়ে এক প্রাণঘাতী পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শাবিপ্রবির পাঁচজন সাবেক শিক্ষার্থীকে আটক করে এখন আইনী হয়রানি ও নিপীড়নের আওতায় আনা হয়েছে যা বাংলাদেশের সংবিধানে নিশ্চিত মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং একটি অতীব কদর্য ও সহিংস রাজনৈতিক কৌশল।

একইভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক তাঁদের স্বজনদের হুমকি ও হয়রানির মত কদর্য কৌশলও আমরা এই শিক্ষার্থীদের উপর প্রয়োগ হতে দেখছি। আমরা সরকারের এই সমস্ত তৎপরতাকে ধিক্কার জানাই এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি এবং এযাবৎ দায়ের করা মামলাগুলোর প্রত্যাহার দাবি করি। একই সাথে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের উপর মানসিক নিপীড়নের কুট-কৌশল অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানাই।

শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে এতে বলা হয়, আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চাই যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাবেক শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের নৈতিক সমর্থন এবং আর্থিক সহায়তা দেয়া কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড নয় এবং যদি কোন আইনের কোন ধারা এই ধরণের নিপীড়নকে ন্যূনতম বৈধতা দিতে পারে তবে সেই আইন নাগরিক অধিকার বিরোধী এবং তা অবিলম্বে বাতিল হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক শাবিপ্রবির চলমান আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখা এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও খাবারের জন্য সাধ্যমত আর্থিক সহায়তা দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। 

RELATED ARTICLES

Most Popular