নবদূত রিপোর্ট:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেছেন, যাদের নামে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, খারাপ ইতিহাস রয়েছে, কোনো ধরনের মামলা রয়েছে, অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত, শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত, বিতর্কিত তাদেরকে অবশ্যই আমরা নেতৃত্বে আনব না।
তিনি বলেন, সৎ মেধাবী ও দেশমাতৃকার জন্য আপোসহীন, সামনে জাতীয় নির্বাচনে যে কোনো বাধা মোকাবিলা করতে পারবে এই ধরনের নেতৃত্ব অগ্রাধিকার পাবে।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের সমন্বিত সম্মেলন উপলক্ষ্যে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, হল সম্মেলন আয়োজনের জন্য শুরু থেকেই আমাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিক মহামারি ”কোভিড-১৯” এর প্রেক্ষিতে উদ্ভূত নানাবিধ বাস্তবতায় সম্মেলন আয়োজনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সমন্বিত হল সম্মেলনের আয়োজনকে সফল করার লক্ষ্যে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে ১৮টি হলের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নেতা কর্মীদের বিভিন্ন বক্তব্য দাবী দাওয়া পরামর্শ শুনেছি ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন,’হল সম্মেলন আয়োজনের জন্য শুরু থেকেই আমাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিক মহামারি ”কোভিড-১৯” এর প্রেক্ষিতে উদ্ভূত নানাবিধ বাস্তবতায় সম্মেলন আয়োজনে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সমন্বিত হল সম্মেলনের আয়োজনকে সফল করার লক্ষ্যে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে ১৮টি হলের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে উপস্থিত হয়ে নেতা কর্মীদের বিভিন্ন বক্তব্য দাবী দাওয়া পরামর্শ শুনেছি ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এসময় তিনি আরো বলেন, সম্মেলনের অন্যতম গুরুদ্বপূর্ণ বিষয় “নেতৃৎ নির্বাচন” এর বিষয়টিতেও বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দীর এই পর্যায়ের নিউ নর্মাল রিয়েলিটি কে বিবেচনায় নিয়ে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের উপযোগী মানবসম্পদ গড়তে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা সম্পন্ন কর্মীদেরকেই নেতৃত্বে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করা হবে।
নেতৃত্ব নির্বাচনের মাপকাঠি কী হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন,’যাদের নামে অভিযোগ রয়েছে, খারাপ ইতিহাস থাকে, কোনো ধরনের মামলা রয়েছে অথবা অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত, শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আমরা নেতৃত্বে আনতে দেব না। সৎ মেধাবী ও দেশমাতৃকার জন্য আপোসহীন, সামনে জাতীয় নির্বাচনে যে কোনো বাধা মোকাবিলা করতে পারবে এই ধরনের নেতৃত্ব অগ্রাধিকার পাবে।
হল কমিটি কবে হতে পারে এই প্রশ্নে সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের নেত্রী, আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পর্যায়ের যারা আছেন তারা যখন নির্দেশনা দেবেন। আমরা প্রস্তুত আছি। ৩০ তারিখ হল সম্মেলন শেষে সর্বোচ্চ দুই তিন দিন অথবা এক সপ্তাহ লাগতে পারে।আমি নিজেও পদপ্রত্যাশী ছিলাম, আমরা চাই যতদ্রুত সম্ভব কমিটি দিতে। আমাদের ভাই বোনেরা অনেকদিন যাবত অপেক্ষা করে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব কবে নাগাদ দেখা যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,” আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববৃন্দের নির্দেশনা আলোকে আমদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত। নেতৃবৃন্দ যখনই সম্মেলনের জন্য ডাকবেন আমরা বসবো,তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
পারিবারিক আওয়ামী সম্পৃক্ততাকে প্রাধান্য দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,’যারা আদর্শিক এবং পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগের কর্মী রয়েছে তারা অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কাছে আমরাও যাই, পদপ্রত্যাশীরাও যাবে তাই তারা যদি কারো নাম বলে আমরা অবশ্যই সেটি বিবেচনা করব। তবে নেতকর্মীরা আমাদের এমন নির্দেশনা দেন নি৷
সংবাদ সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন বলেন,’ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সম্মেলন নিয়ে বিভিন্ন মহল ও গণমাধ্যমের যে প্রত্যাশা,এটি প্রমাণ করেছে যে,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের নির্বতার একমাত্র ঠিকানা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অনিবার্য প্রতিষ্ঠান।আমরা হলগুলোতে তেমনই নেতৃত্ব চাই,যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব প্রদান করবে,যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে ভুমিকা রাখবে,যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশকে সমুন্নত রাখতে পারবে,যারা পলিটিকাল ব্যারিয়ার থেকে বেরিয়ে ক্যারিয়ারকে প্রাধান্য দেবে,যারা একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে।
এবং আমরা চাই যারা হল শাখার নেতৃত্বে আসবে তারা টেকসই হবেন, মেধাবী হবেন,আদর্শিক ভুমিকা রাখতে আপোষহীন হবেন,মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করবেন এবং বঙ্গবন্ধু কণ্যার রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভুমিকা রাখবে। এবং যাদের কোনো ব্যাড রেকর্ড রয়েছে তারা যেন নেতৃত্বে না আসতে পারে এবিসি আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকব।
অনুপ্রবেশকারী প্রশ্নে সাদ্দাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিশুদ্ধতম নেতৃত্ব উঠিয়ে আনার জন্য। আমাদের নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন থেকে সাংগঠনিক কাঠামোয় জড়িত। আমরা ইতোমধ্যে পদপ্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নিয়েছি। আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করছি। তবুও কারো যদি অভিযোগ থাকে যেটি সাংগঠনিক ফোরামে আলোচনা করার মতো বিষয় তা যেন আমাদেরকে অবহিত করা হয়। পূর্বে যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, অভিযোগের ঘটনা ঘটেছে, তা ঘটবে না। আমাদের সংগঠনের গতিময়তার ফলে সেটি এড়াতে পারব৷ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনার রূপকল্প যারা বাস্তবায়ন করবে, সংগঠনকে ধারণ করবে তারাই স্থান পাবে। এখানে উড়ে এসে জুড়ে বসার সুযোগ নাই।
তিনি আরো বলেন,’এই হল সম্মেলনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজ গড়ে তুলতে চাই। এই হল সম্মেলনের মাধ্যমে মৌলবাদের বিষ দাঁত ভেঙে দিতে ছাত্র সমাজকে দীক্ষা নেয়ার শপথ দেখাতে চাই! প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির কারণে সভা-সমাবেশ নিয়ে সরকারের কিছু বিধিমালা রয়েছে সেগুলো মেনে আমরা সম্মেলন করব। একই সাথে আমরা শারীরিক দুরত্বে নিশ্চিত করব। যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছে শুধু তারাই সম্মেলন আসবেন। আর যারা আংশিক সংক্রমিত রয়েছেন তাদেরকে ইতিমধ্যে সম্মেলনে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আমাদের যারা সাধারণ কর্মীরা রয়েছেন, তাদেরকে আমরা সমাবেশে নিয়ে যেতে পারছি না। তবে প্রত্যেকটি হলে প্রজেক্টেরের মাধ্যমে আমাদের সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল রবিবার (৩০জানুয়ারি) টিএসসি প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম,সাংগঠনিক সম্পাদক এবি এম মোজাম্মেল হক, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।