Friday, November 15, 2024
Homeজাতীয়সরস্বতী পূজা আজ

সরস্বতী পূজা আজ

নবদূত রিপোর্ট:

হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বিদ্যার ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতী পূজা আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি)। মর্ত্যরে ভক্তকুল শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী দেবী সরস্বতীর আবাহন করবে। ঢাক-ঢোল-কাঁসর, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে দেশের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ।

শাস্ত্রমতে, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। আজ (শনিবার) সকাল ৭টা ৭ মিনিটে শুরু হবে পঞ্চমী তিথি। পরদিন রোববার সকাল ৭টা ৯ মিনিটে পূজার তিথি সমাপ্ত হবে। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী দেবীর আরাধনা করেন।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে ‘সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে/ বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্তুতে’ এই মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রণতি জানাবেন তাঁরা।

করোনাকালে এবারও পূজার আয়োজন হচ্ছে সীমিত পরিসরে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে। পূজার আনুষ্ঠানিকতার বাইরে অন্য কোনো আড়ম্বরতা থাকছে না। মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি ও ধর্মীয় আলোচনা সভা কিংবা জনসমাগম হয় এমন আয়োজন এড়িয়ে চলা হবে।

অন্যদিকে করোনার কারণে এবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজার আয়োজন হচ্ছে না। তবে অন্যান্য মন্দির, পূজামণ্ডপ কিংবা ভক্তদের ঘরে ঘরে পূজার আয়োজন থাকছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার ও সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ হবে।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হবে। তবে এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে এ পূজা উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা।

জগন্নাথ হলে সকাল ৯টায় শুরু হবে পূজার্চনা এবং ১০টা থেকে শুরু হবে অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যায় আরতি অনুষ্ঠান।  সন্ধ্যা ৭টার দিকে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে আসবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। প্রবেশে কারো জন্য নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মাস্ক এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন পূজা কর্তৃপক্ষ।

অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, তিনি বলেন, শুধুমাত্র উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় পূজা অনুষ্ঠিত হবে। করোনার সংক্রমণ কম থাকায় প্রাথমিকভাবে বিভাগভিত্তিক পূজার সিদ্ধান্ত নিলেও ওমিক্রন সেটি বাঁধা হয়ে দাঁড়াল। মনঃকষ্ট থাকলেও হল প্রশাসনের একটিমাত্র কেন্দ্রীয় পূজার সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছে শিক্ষার্থীরা।

সামনের বছর পুরোনো আমেজে আবারও পূজা উদযাপন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক মিহির লাল সাহা।

করোনার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের খেলার মাঠে বিভাগভিত্তিক পূজামণ্ডপ তৈরি করা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগই একটি করে মণ্ডপ তৈরি করত। এই পূজাকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে আমেজ লক্ষ্য করা যেত। গত বছর থেকে খুব সীমিতভাবে পালন হচ্ছে। যেখানে অন্যান্য বছর ৮০টির মতো মণ্ডপ থাকত সেখানে একটি মাত্র মণ্ডপ দিয়েই পূজা উদযাপন করতে হচ্ছে।

এদিকে পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ ভূখন্ডে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular