নবদূত রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা নিরীহদের উপর তান্ডব চালিয়ে ব্যপক ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলায় আহত হয়েছে নারীসহ অন্তত ১০ জন। হামলাকারীরা ২৩টি বসতঘরে ভাংচুর লুটপাট ও আহতের ঘটনা ঘটিয়েই শান্ত হয়নি। নিরীহদের ১৭টি ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে ঘরবাড়িসহ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত হামলাকারীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গত শুক্রবার (০১ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি দোকানের ভাড়া নিয়ে গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকার যুবলীগ কর্মী আনোয়ার হোসেন রানার সঙ্গে যুবলীগ কর্মী নুরে আলম ও মাসুমের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। নুরে আলম ও মাসুম গোলাকান্দাইল নতুন বাজার অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করেন। কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনোয়ার হোসেন রানাসহ তার লোকজন বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে নুরে আলম ও মাসুমের নেতৃত্বে মাসুম বিল্লাহ, ইমরান, রনি, নবি, তুহিন, পনিরসহ ৫০ থেকে ৬০ জনের একদল সন্ত্রাসী রামদা, চাপাতি, পিস্তলসহ বিভিন্ন অশ্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আনোয়ার হোসেন রানা ও তার ভাই আমজাত হোসেনের ২৩টি ভাড়াটিয়া বসতঘরে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাড়াটিয়া ইউনুছ, মারজান সরকার, বিপ্লব, ঝুমা রানী সরকার, জামেনা খাতুন, আশরাফ, তফন কুমার, রাজীব, মরিয়ম, আবুল আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এক পর্যায়ে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও আহতের ঘটনার ঘন্টা খানেকপর হামলাকারীরা ১৭টি বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পেট্রোল ঢালার সময়ই ঘর গুলোতে থাকা লোকজন বের হয়ে যায়। এতে মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের লেলিহান শিখা ৫০ থেকে ৬০ ফুট উচুতে উঠে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। খবর পেয়ে কাঞ্চন ও ডেমড়া ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। ততক্ষনে ঘরসহ ঘরে থাকা সকল মালপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ্য ভাড়াটিয়ারা জামেনা খাতুনসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আমরা নিরীহ মানুষ। বিভিন্ন কলকারখানা শ্রমিক হিসেবে চাকুরি করে জীবিকা নির্বাহ করি। পেট্রোল ঢালার সময় বার বার বলেছিলাম খাবার ও মালপত্র গুলো বের করার সুযোগ দেন। সেটাও দেয়া হয়নি। এখন আমরা নিঃশ হয়ে পড়েছি। আমরা হামলাকারীদের উপযুক্ত বিচার ও ক্ষতিপুরন দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুরে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, তারা অটোরিকশা ভাংচুর করে অন্যায় করেছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, উভয় পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। আর তদন্ত মোতাবেক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।