Saturday, September 21, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনকারী ৬ জনই ছাত্রলীগের কর্মী

ঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতনকারী ৬ জনই ছাত্রলীগের কর্মী

নবদূত রিপোর্ট:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে কথিত ‘গেস্টরুম’ কালচারের নামে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে একই হলের ৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ৬ জনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। তারা সবাই বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের হল কমিটির পদপ্রত্যাশী আবু ইউনুছ ও রবিউল ইসলাম রানার অনুসারী। এরা দু’জনই ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১০টায় এই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আখতার হোসেন নামে ওই শিক্ষার্থী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী।তার বাড়ি রংপুর জেলায়

অভিযুক্ত ছাত্রলীগের ৬ কর্মী হলো- সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কামরুজ্জামান রাজু,ইতিহাস বিভাগের হৃদয় আহমেদ কাজল, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইয়ামিম ইসলাম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ওমর ফারুক শুভ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাইফুল ইসলাম ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সাইফুল ইসলাম রোহান।তারা ৬ জনেই ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (আখতার) কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। সে শুধু শারীরিকভাবে নয় মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত ছিল। কারণ এক সপ্তাহ আগে তার বাবা ব্রেন স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার বাবা একজন দিনমজুর। অসুস্থতার মধ্যেও তাকে রাত দশটার দিকে গেস্টরুমে ডাকা হয়। তখন ভুক্তভোগীকে (আখতার) অভিযুক্তরা বলে এ তুই গতকাল গেস্ট রুমে ছিলি না কেন। তখন ভুক্তভোগী (আখতার) বলে, ‘‘ভাই আমি খুব অসুস্থ কয়েকদিন থেকে। এছাড়া আমার বাবা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছেন

একথা বলার পর তাকে অভিযুক্তরা বলে, ‘‘এ কুত্তার বাচ্চা এ তুই ১০ মিনিট উপরে লাইটের দিকে তাকিয়ে থাকবি।’’ এরপর কয়েক মিনিট তাকানোর পর আখতার অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করায় তার সহপাঠীরা। চিকিৎসা নেয়ার পর তাকে ভয় দেখিয়ে অভিযুক্তরা বলে, ‘‘এ তোরে যে আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে নিয়ে আসছিলাম এটা কাউকেই বলবি না।’’

ভুক্তভোগী আরও বলেন, আমি খুব ভয়ে আছি। এখন যদি আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। আমাকে বলতে নিষেধ করেছে তারা (অভিযুক্তরা)।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের হল কমিটির পদপ্রত্যাশী আবু ইউনুছ বলেন, ঘটনাটি আমি মাত্র জেনেছি। এটা আসলে অপ্রত্যাশিত। আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।

রবিউল ইসলাম রানা বলেন, এই বিষয়ে শুনলাম। এটা আসলে ঠিক করেনি। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমি রাত তিনটার সময় হলে গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলেছি, সাপোর্ট দিয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা আবাসিক শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম সানার নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। সেই আলোকে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ওই হলের আবাসিক শিক্ষিক জাহিদুল ইসলাম সানাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।এই কমিটিকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।এই কমিটিতে সদস্যরা হলেন-জাহিদুল ইসলাম সানা,ড. কাজী শাহেদুল হালীম ও বেল্লাল আহমেদ ভূঁইয়া।

RELATED ARTICLES

Most Popular