প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিলে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ৬০% নারী কোটা, ২০% পোষ্য কোটা, ২০% পুরুষ কোটা ডিপিই তার বিশেষ বিধিতে যুক্ত করেছে। এই প্রতিটি কোটায় নিয়োগে পুনরায় ২০% বিজ্ঞান কোটা প্রয়োগ করার বিষয়টি বিশেষ বিধিতে দেখা যায়।
এই কোটা বাতিলে আদালতে রিট করেন মোঃ তারেক রহমানের পক্ষে বিজ্ঞ আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া। আদালত কোটা বাতিলে রুল জারি করেছে কোটা বাতিলের রিটের স্বপক্ষে। কর্মসূচীর সঞ্চালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আওতায় সিধ্বেশ্বরী কলেজের শিক্ষার্থী আহবায়ক মিনা আলামিন।
উপস্থিত বক্তাদের মাঝে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রত্যাশী আশিকুর রহমান জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার বাহিরে বিশেষ বিধিতে পোষ্য কোটা রেখে অন্যায় করেছে ডিপিই। নারী কোটার ক্ষেত্রেও ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা চান তিনি।
উপস্থিত বক্তাদের মাঝে চাকরি প্রত্যাশী আবদুল্লাহ আল মুশতাক জানান, পোষ্য কোটার প্রার্থীদের চেয়ে বেশি নাম্বার পেয়ে আমার চাকরিটা হবে না, কারণ আমি একজন কৃষকের ছেলে; এটা কি কোনো অন্যায় ? রাষ্ট্র আমার সাথে এরকম বৈষম্য করতে পারে না, সংবিধান সেই অধিকার রাষ্ট্রকে দেয়নি । তাই আমি এই বৈষম্যের অবসান চাই ।
চাকরি প্রত্যাশী আলমগীর হোসাইন জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহান সংসদে দাঁড়িয়ে ১-১৩ তম গ্রেড পর্যন্ত সকল ধরনের কোটা বাতিল করার ঘোষণা দেন তারই পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে । কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন আমলে না নিয়ে অধিদপ্তর অন্যায় ভাবে বিভিন্ন কোটার সংযোজন করে । তাই আমি এই বৈষম্যের অবসান চাই এবং ২০১৮ কোটা বাতিল প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন চাই
অধিকার বঞ্চিত বেকারসমাজ এর আয়োজিত কর্মসূচীতে কর্মসূচির আহবায়ক মোঃ তারেক রহমান জানান, এক দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ১ম ও ২য় শ্রেনীর নিয়োগে প্রজ্ঞাপন সকল কোটা বাতিল করেছে। কিন্তু ডিপিই উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে বিশেষ বিধি নামে একটি বিধি বানিয়ে পোষ্যদের জন্য ২০% কোটা, আর নারীদের জন্য ৬০% কোটা, বাকি ২০% পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত করেছে। প্রত্যেক কোটায় আবার ২০% বিজ্ঞান বিভাগ থেকে কোটায় নিয়োগ বাধ্যতামূলক করেছে। এই ধরনের বিন্যাস তারা কার পরামর্শ নিয়ে করেছে আমার জানা নাই। কিন্তু এটা কৃষক, দিন মজুর, দোকানদার, মুচি, কুলির সন্তানদের চাকরির অধিকার কে সংক্ষুব্ধ করে। এভাবে চাকরি করার ব্যাক্তিরা তাদের সন্তানের জন্য আলাদাভাবে কোটা চাইতে পারেন না। কোটা না থাকা মানে কাউকে নিয়োগ বঞ্চিত করা নয়, সবাই উম্মুক্তভাবে নিজেকে প্রস্তত করুক কর্মে নিয়োজিত করার জন্য। তারা এই সাহসটি কিভাবে করে, যেখানে প্রতিবন্ধী এতীমদের কোটা না রেখে নিজেদের সন্তান স্ত্রীদের জন্য ২০% পোষ্য কোটা রাখে। তাদের কোটা বাতিল করতে হবে, তাদের কোটা বাতিল করা মানে তাদের নিয়োগ বঞ্চিত করা নয়, বরং নিয়োগে প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজায় রাখা। আমরা আইনী লড়ায় চালিয়ে নিচ্ছি, কিন্তু ডিপিই কর্তৃক আদালত অবমাননার কিছু নমুনা আমরা পেয়েছি। সত্যিই তারা আদালত অবমাননা করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা ঠুকে দেব। তখন তাদের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে। বেকাররা আর ছাড় দেবে না। আমরা পুনরায় আগামী শুক্রবার কর্মসূচি দিয়েছি। তার আগেই নিয়োগ বিধির কোটা প্রয়োগের ৮ নং ধারার বৈষম্যমূলক বিশেষ বিধির বাতিল চাই। অন্যথ্যায় রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, আলমগীর হোসেন, মনির হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মুশতাক, মোঃ রিপন ও চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুব সমাজ।